আরবিসি ডেস্ক : করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি বিবেচনায় চলমান বিধিনিষেধ বা ‘লকডাউন’ আরও এক সপ্তাহ বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। আগামী ৫ মে পর্যন্ত এ বিধিনিষেধ বহাল থাকবে।
এখনকার মতোই বিধিনিষেধ চলাকালে গণপরিবহন, অফিস বন্ধ থাকবে। তবে দোকানপাট ও শপিংমল সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে।
বুধবার (২৮ এপ্রিল) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ‘করোনাভাইরাসজনিত রোগ (কোভিড-১৯)-এর বিস্তার রোধে সার্বিক কার্যাবলি/চলাচলে বিধিনিষেধের সময়সীমা বর্ধিতকরণ’ বিষয়ক প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সরকার ঘোষিত দ্বিতীয় দফার লকডাউন শেষ হচ্ছে বুধবার। এদিন থেকেই আরও এক সপ্তাহ লকডাউন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তা চলবে আগামী ৫ মে পর্যন্ত।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, করোনা ভাইরাজজনিত রোগ (কোভিড-১৯) সংক্রমণের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় পূর্বের সকল বিধি-নিষেধ ও কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় কিছু নতুন শর্ত সংযুক্ত করে বুধবার (২৮ এপ্রিল) মধ্যরাত থেকে ৫ মে মধ্যরাত পর্যন্ত এ নিধি-নিষেধ আরোপের সময় বর্ধিত করা হলো।
১. স্থল, নৌ ও বিমানযোগে যে কোনো ব্যক্তি ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশের (পণ্য পরিবহন ব্যতীত) ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। তবে, শুধুমাত্র ভিসার মেয়াদ উত্তীর্ণ বাংলাদেশিরা ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশনের অনুমতি/অনাপত্তি ছাড়পত্র গ্রহণ সাপেক্ষে বিশেষ বিবেচনায় বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে, বাংলাদেশে প্রবেশকারীদের ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন সংক্রান্ত বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর প্রণীত বিধি-নিষেধ কঠোরভাবে অনুসরণের জনা স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, জননিরাপত্তা বিভাগ, সুরক্ষা সেবা বিভাগ, নৌ-পরিবহন মন্ধণালয় ও সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকগণ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
২. দোকানপাট/শপিংমাপসমূহ সকাল ১০টা হতে রাত ৮টা পর্যন্ত যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন সাপেক্ষে খোলা রাখা যাবে। স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনের বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, শ্রম মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট বাণিজ্য সংগঠনসহ সংশ্লিষ্ট বাজার সংস্থার ব্যবস্থাপনা কমিটি প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেবে। নির্দেশনা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
৩. আসন্ন ঈদ-উল-ফিতর নামাজের বিষয়ে ধর্ম বিষয়ক মন্তণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী কার্যক্রম নিতে হবে।
৪. মধ্যপ্রাচ্য, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও চীন থেকে আগত যাত্রীদের ভ্যাকসিন নেওয়ার সনদসহ নন-কোভিড-১৯ সনদধারী যাত্রীরা নিজ বাড়িতে ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকবেন। সে ক্ষেত্রে তাদের সংশ্লিষ্ট থানাকে আগমন ও কোয়ারেস্টিনের বিষয়টি অবহিত করতে হবে।
৫. উল্লিখিত দেশ থেকে আগত শুধুমাত্র নন-কোভিড-১৯ সনদধারীরা সরকার নির্ধারিত কোয়ারেন্টিন ব্যবস্থায় থাকবেন। ৩-৫ দিনের মধ্যে চিকিৎসকরা তাদের পরীক্ষা করে সম্মতি দিলে তারা স্ব স্ব বাড়িতে ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকবেন। তবে সে ক্ষেত্রেও তাদের স্ব স্ব থানাকে অবহিত করতে হবে।
৬. অন্যন্য দেশ থেকে আগত যাত্রীরা সরকার নির্ধারিত হোটেলে নিজ ব্যয়ে ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকবেন।
উল্লিখিত বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সব সিনিয়র সচিব/সচিবদের নির্দেশনা দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গত ১৪ এপ্রিল থেকে এক সপ্তাহের কঠোর লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। সে দিন থেকে দেশে জরুরি সেবা, ব্যাংক ও গার্মেন্টস কারখানা ছাড়া সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। সেই সঙ্গে বন্ধ রয়েছে সব গণপরিবহন।
এর আগে, করোনা ভাইরাসের ঊর্ধ্বগতির কারণে গত ৫ এপ্রিল ভোর ৬টা থেকে ১৩ এপ্রিল রাত ১২টা পর্যন্ত সারাদেশে শপিংমল, দোকানপাট, হোটেল-রেস্তারাঁসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আরোপের পাশাপাশি গণপরিবহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল। তবে পরে গণপরিবহন ও দোকানপাট খুলে দেওয়া হয়।
আরবিসি/২৮ এপ্রিল/ রোজি