• শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:২৩ অপরাহ্ন

সুবিধাবঞ্চিতদের পাশে চা বিক্রেতা ফারুক

Reporter Name / ১০৮ Time View
Update : মঙ্গলবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২১

স্টাফ রিপোর্টার : ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধা জুলেখা বেগম। স্বামী মারা যাওয়ায় রাজশাহী নগরীতে ভিক্ষা করেই জীবিকা নির্বাহ করেন তিনি। নগরীর শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান চত্বরের পাশে কবরস্থান সংলগ্ন ফুটপাতে এসেছেন বিনামূল্যে ইফতার নিতে।

সর্বাত্মক লকডাউনে খাবার পাওয়া দায় হয়েছে শতাধিক সুবিধা বঞ্চিত মানুষের। তাই প্রতিদিন সূর্য পশ্চিম আকাশে গড়িয়ে পড়তেই ভীড় জমান সুবিধা বঞ্চিত, পথশিশু ও নিম্ন আয়ের লোকেরা। শুধুমাত্র এক বেলা পেট পুরে খাবার আশায় আসেন তারা।
জুলেখা জানান, এক পুত্র ও এক কন্যা বিয়ের পর আলাদা হওয়ায় পথে নামতে হয়েছে তাকে। পহেলা রমজান থেকে প্রতিদিনই এখানে খাবার পাচ্ছি। কোন দিন সবজি খিচুড়ি, আবার কোন দিন বিরিয়ানী দেয়। অন্তত একবেলা শান্টিত মতো খেতে পারছি।

জানা যায়, নগরীর কামারুজ্জামান চত্বরের পাশে কবরস্থান সংলগ্ন ফুটপাতের খুপরি দোকানে চা বিক্রি করেন ফারুক আহমেদ। চা বিক্রি করে যা আয় হয় অর্ধেক খরচ করেন নিজের সংসারের জন্য, বাকিটা দিয়ে সুবিধা বঞ্চিত মানুষের মুখে অন্ন তুলে দেন তিনি। দীর্ঘ প্রায় পাঁচ বছর ধরে সপ্তাহে এক দিন চলে তার এই মহতি উদ্যোগ। তবে এবার রমজান মাস ও করোনা পরিস্থিতিতে বিকেল পর প্রতিদিনই শতাধিক অভুক্ত অসহায়, সুবিধাবঞ্চিত ও নিম্ন আয়ের মানুষের মাঝে ইফতার বিতরন করছেন তিনি।

শতাধিক মানুষের বিশাল আয়োজনের সমস্ত কাঁচা-বাজার কেঁটে দেন তার স্ত্রী পলি বেগম ও তার দুই মেয়ে। মাঝে মাঝে বাবাকে সঙ্গ দেন তার স্কুল পড়ুয়া ছেলে। আর রান্না করা থেকে শুরু করে বিতরণে সহায়তা করেন স্থানীয় কিছু নিম্ন আয়ের মানুষ।
মঙ্গলবার বিকেলে ফারুকের চায়ের দোকানে গিয়ে দেখা যায়, বিরাট হাঁড়িতে রান্না শেষে চলছে খাবার বিলির প্রস্তুতি। আর ফুটপাতে দীর্ঘ লাইনে সবাই অপেক্ষা করছে খাবারের জন্য। ফিরেছেনও একবেলার খাবার নিয়ে।

এ বিষয়ে ফারুক আহম্মেদ বলেন, ১৯৯০ সালে রাজশাহী শহরে এসে ৪ দিন না খেয়ে থাকার তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে ভেবেছিলাম অভুক্ত মানুষের মুখে খাবার তুলে দিবো। সেই চিন্তা থেকে বছর পাঁচেক আগে এক শুক্রবারে দুই কেজি চাল দিয়ে খিচুড়ি রান্না করে অভুক্ত কিছু মানুষকে নিয়ে খেতে খেতে বসার মধ্য দিয়ে শুরু করি।

তিনি আরো জানান, তার ব্যাক্তি উদ্যোগে সপ্তাহে প্রতি শুক্রবার খাবার বিতরণ শুরু করলে প্রতি শুক্রবারেই অভুক্ত মানুষের সংখ্যা বাড়তে থাকে, যা তার একার পক্ষে সম্ভব হয় না। তাই কেউ সহযোগিতা করলে তিনি ফিরিয়ে দেন না।

তিনি জানান, মানুষের সহযোগিতা পেয়ে তিনি খাবারের মানোন্নয়ন করেছেন। আগে সবজি-খিচুড়ি করতেন। আগে দুই কেজি চালের খিচুড়ি করতেন। এখন এক মণ চাল দিয়ে রান্নার পাশাপাশি মাংসও দেন তিনি।

আরবিসি/২৭ এপ্রিল/ রোজি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category