আরবিসি ডেস্ক : বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দ্বিতীয় দফায় করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে বলে জানিয়েছেন তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসক ডা. এফ এম সিদ্দিকী।
শনিবার দিবাগত রাতে গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় খালেদা জিয়াকে দেখে এসে তিনি এ কথা জানান। এর আগে রাত ১০টায় খালেদা জিয়ার নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে যান ডা. সিদ্দিকী এবং ডা. জাহিদ হোসেন।
জানা গেছে, শনিবার দুপুরে ফিরোজায় অবস্থানরত খালেদা জিয়ার করোনা টেস্টের জন্য নমুনা সংগ্রহ করেন ল্যাবএইড হাসপাতালের টেকনোলজিস্ট মো. শরীফ উদ্দিন। তার সঙ্গে ছিলেন খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের আরেক ডাক্তার ডা. আল মামুন।
ডা. সিদ্দিকী বলেন, শনিবার আমরা ম্যাডামের একবার কোভিড টেস্ট করেছিলাম। সেটা লো-টাইটারে পজিটিভ এসেছে। কিন্তু আমরা মনে করছি, আগামী ৫-৬ দিনের মধ্যে তিনি করোনা নেগেটিভ হয়ে যাবেন। আর তার বাসার সব (১৪ জন) স্টাফের পরীক্ষা করেছি, তাদের মধ্যে ৩ জনের পজিটিভ এসেছে। বাকিদের করোনা নেগেটিভ রেজাল্ট এসেছে। কিন্তু সবাই শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ আছেন।
তিনি আরও বলেন, ম্যাডাম এবং অন্যদের দেখে বোঝার উপায় নেই যে তাদের কোনো জটিলতা ছিল।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডা. সিদ্দিকী বলেন, শনিবার ম্যাডামের করোনা দ্বিতীয় টেস্ট ছিল। আগামী ৪-৫ দিনর মধ্যে আবার তার করোনা টেস্ট করব। শনিবার তার শারীরিক অবস্থা খুব ভালো। আপনারা জানেন, তাকে পর্যবেক্ষণে রেখেছি।
ডা. সিদ্দিকী বলেন, আমরা ম্যাডামের শারীরিক পরীক্ষার রিভিউ করেছি। সবগুলো রিপোর্ট নতুন করে করা হয়েছে, সেগুলো দেখলাম। তার শারীরিক অবস্থা দেখেছি। তিনি শারীরিকভাবে আগের চেয়ে বেশ ভালোই আছেন। তার অবস্থা স্থিতিশীল।
তিনি আরও বলেন, ম্যাডামের করোনা উপসর্গ দেখা দেওয়ার দিন যদি ধরি তাহলে শনিবার ১৮তম দিন। সেই হিসেবে আমরা মনে করছি করোনা ঝুঁকির মূল ভয়টা কেটে গেছে। করোনায় দ্বিতীয় সপ্তাহের যে জটিলতা সেটা ম্যাডামের হয়নি। করোনা সংক্রান্ত যে বিপদ সেগুলো থেকে ম্যাডাম এখন মুক্ত বলে আশা করছি।
ড. সিদ্দিকী আরও বলেন, ম্যাডাম গত এক বছর কোয়ারেন্টাইনেই আছেন। এই সময়ে আমরা তার কোনো পরীক্ষা করতে পারিনি। কারণ, তখন করোনা সংক্রামণের ভয় ছিল। কিন্তু তিনি তো করোনা আক্রান্ত হয়ে গেছেন এবং আল্লাহর রহমতে সুস্থ হওয়ার পথে আছেন। তাই এখন মেডিকেল বোর্ডের পরিকল্পনা হচ্ছে, করোনা সম্পৃক্ত যত পরীক্ষা করেছি, এর বাইরেও তার অন্যান্য শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ফেলা। আশা করছি, আগামী কয়েকদিনের মধ্যে সেইগুলো করব।
গত ১১ এপ্রিল খালেদা জিয়ার শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। তিনি ছাড়াও তার বাসভবন ফিরোজার আরও ৮ জন ব্যক্তিগত স্টাফ আক্রান্ত হন। তাদের চিকিৎসাও এখানে চলছে।
৭৫ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দুর্নীতির দুই মামলায় দণ্ডিত। প্রায় আড়াই বছরের মতো কারাগারে থাকার পরে দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু পর পরিবারের আবেদনে সরকার গত বছরের ২৫ মার্চ মানবিক বিবেচনায় শর্তসাপেক্ষে তাকে সাময়িক মুক্তি দেয়। তখন থেকে তিনি গুলশানে নিজের ভাড়া বাসা ফিরোজায় থেকে ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে রয়েছেন।
আরবিসি/২৫ এপ্রিল/ রোজি