• শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:১৮ পূর্বাহ্ন

তরমুজে দিনবদলের স্বপ্নে চাষীরা

Reporter Name / ১৭৯ Time View
Update : মঙ্গলবার, ২০ এপ্রিল, ২০২১

চলনবিল প্রতিনিধি: শস্য ভান্ডারখ্যাত চলনবিলের কৃষকের এবার তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে। দেশের সব এলাকায় তরমুজের আবাদ বেশি হয় না কিন্তু তার মধ্যে চলনবিল এলাকায় তরমুজ একটু বেশি হয়। আবহাওয়া অনুকূল ভাল থাকায়, বিগত কয়েক বছর ফলন ও দাম ভালো পাওয়ায় তরমুজ আবাদে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের। উপজেলা কৃষি বিভাগও এবার তরমুজের বাম্পার ফলনে আশা করছে।

সংশ্লিষ্ঠ সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে চলনবিলের ৯টি উপজেলায় প্রায় ২৫ হাজার হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ করা হয়েছে। এবছর আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ভালভাবেই তরমুজের আবাদ করতে পেরেছে কৃষক। কোন দুর্যোগ হয়নি বলে তরমুজের বাম্পার ফলনের প্রত্যাশা করছে চাষীরা।

চলনবিলের ৯টি উপজেলার মধ্যে তাড়াশ, চাটমোহর,বড়াইগ্রাম ও গুরুদাসপুর উপজেলায় তরমুজ চাষ সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে। এরমধ্যে শুধু গুরুদাসপুর উপজেলাতে সব চাইতে বেশি ৬ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে তরমুজ আবাদ হয়েছে। তাড়াশে ৪ হেক্টর জমিতে তরমুজ আবাদ করা হয়েছে।

গুরদাসপুর উপজেলার মশিন্দা গ্রামের তরমুজ চাষী রবি করিম জানান, চৈত্র মাসের শুরুর দিকে তরমুজ তোলা শুরু হবে। তিনি আরো জানান, আমি ৩ বিঘা জমিতে তরমুজ আবাদ করেছি। তরমুজের গাছ গুলো ভাল হয়েছিল। তরমুজ আসার পর্যন্ত আবহাওয়া ভালো ছিল কিছুদিন পরে বিক্রি করতে হবে।

কৃষকরা আরো জানিয়েছেন, বিগত কয়েক বছর ধরে ভালো ফলনের পাশাপাশি দামও ভালো পাওয়ায় দিন দিন তরমুজ চাষে তাদের আগ্রহ বাড়ছে। আগের বছরের তুলনায় এবারো তরমুজের বাম্পার ফলনের আশা করছেন তারা।
তরমুজ বিজ রোপনের শুরু থেকেইে এবার তরমুজ গাছ ভালো দেখা যাচ্ছে। গত বছর তরমুজ বিক্রি করে চাষীরা লাভবান হওয়ায় এবছরও তারা খোশ মেজাজে আছেন।

কৃষকরা আরো জানান, তরমুজ আবাদে তেমন ঝামেলা পোহাতে হয় না। সামান্য সেচ এবং প্রয়োজন অনুযায়ী সার ও কীটনাশক দিলেই ভালো ফলন পাওয়া যায়। আবার চলনবিলের বেশির ভাগ জমি উরর্বরা থাকার কারণে আবাদ ভাল হয়। এতে ফলনে কোন প্রভাব পরে না এবং বাম্পার ফলন হয়েছে।

চাটমোহর উপজেলার কাছিকাটা গ্রামের কৃষক আফেল রহমান বলেন, ৩ বিঘা জমিতে তরমুজ আবাদ করেছিলাম খুব ভাল তরমুজ হয়েছে। তাড়াশ উপজেলার নাদোসৈয়দপুর গ্রামের কৃষক মহাব্বত হোসেন জানান, অন্য বছরের তুলনায় শুরু থেকেই আবহাওয়া অনূকুলে থাকায় তরমুজ ভাল হয়েছে। বাম্পার ফলন হয়েছে এমনটাই প্রত্যাশা করছি। তরমুজ চাষীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রতি একর জমিতে তরমুজ চাষে শ্রমিক ও চাষ বাবদ খরচ হয় প্রায় ১৫ হাজার টাকা। বীজ, রাসায়নিক সার ও সেচ বাবদ খরচ হয় আরও ১০ হাজার টাকা। প্রতি একরে তরমুজ আবাদে খরচ হয় প্রায় ২৫ হাজার টাকা।

ভালো ফলন হলে একর প্রতি ৪০থেকে ৬০ মণ তরমুজ পাওয়া যায়। গড়ে প্রতি মন ১০০ থেকে ১৫ শো টাকা দরে বিক্রি হলে এক একরে প্রায় ৭৫ হাজার টাকা বিক্রি করা যায়।

তরমুজ ঘরে তোলা, বাছাই ও বাজারজাতকরণে আরও প্রায় ১৫ হাজার টাকা খরচ বাদ দিলেও লাভ থাকে প্রায় ৪৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা। তবে ওই মূল্যে বিক্রি করতে চাইলে মৌসুমের শুরুতই বিক্রয় করতে হবে।

মাঠ পর্যায়ে কর্মরত উপ সহকারি কৃষি কর্মকর্তারা জানান, এই মৌসুমটি চলনবিলের মাঠে তরমুজ চাষ উপযোগী হওয়ায় এখানকার কৃষকদের কাছে তরমুজ অর্থকরী ফসল। তাই দিন দিন তারা এ আবাদে ঝুঁকছেন।

আরবিসি /২০ এপ্রিল/ রোজি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category