জয়পুরহাট প্রতিনিধি : জয়পুরহাটের সদরে ধারকী টু হেলকুন্ডা মৌজার শত বছরের একটি খাল পানি উন্নয়ন বোর্ড সংস্কারে উদ্যোগ নেয়। একপর্যায়ে গত ফেব্রুয়ারি মাসে সোয়া ৬ কিলো মিটার দীর্ঘ খালটি পুনঃখননের কাজ শুরু হয়। খনন কাজের মাটি খালের দুই পাশে স্থানীয় কৃষকের কাঁচা ধানের উপর ফেলে চাপা দিয়ে রাখা হচ্ছে।
ইতোমধ্যে কয়েক’শ একর জমির কাঁচা ধান মাটি চাপা পড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। এ ঘটনায় উপজেলা হেলকুন্ডা, হানাইল, কাদিপুর এলাকার কৃষকরা ফসলের ক্ষতিপুরণ চেয়ে ধান কেটে ঘরে না তোলা পর্যন্ত খনন কাজ বন্ধ রাখার দাবী জানিয়েছে। কৃষকরা এবিষয়ে প্রতিকার চেয়ে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও পানি উন্নয়ন বোর্ডেও নিবার্হী প্রকৌশলীর কাছে অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগে জানা গেছে, জয়পুরহাট সদর উপজেলার হেলকুন্ডা খাল, পুনঃখনন কাজ শুরু হয় গত ফেব্রুয়ারি মাস, এতে বরাদ্দ হয় প্রায় এক কোটি টাকা। খাল খননের কাজ করছে যশোরের মিশন পাড়ার মেসার্স নুর হোসেন, নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান, কৃষকের দাবী খালটি প্রস্থ ১০ ফুট হলেও ঠিকাদার ৪৫ ফুট জমি দখল নিয়ে আধা পাকা ধান ক্ষেত নষ্ট করে খনন কাজ করে মাটি ভরাট করেছে, এত চরম ক্ষতির মুখে পড়েছে স্থানীয় কৃষকরা।
বাধা দিতে গেলে ঠিকাদারের পক্ষ থেকে নানা ভাবে ভয় ভিতি ও মামলা হুমকি দেওয়া হচ্ছে। ভয়ে অনেকেই কাঁচা ধান কেটে মাটি ভরাটের জায়গা করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। কৃষকরা বলছে ১ মাস পর খালটি খনন করলে তাদের বোরো ধানের ক্ষতি হতো না। এ অবস্থায় চলমান খাল খননে ক্ষতি পুরনের পাশাপাশি ১ মাসের জন্য খাল খনন কাজ বন্ধের দাবী জানিয়েছে তারা।
হেলকুন্ডা গ্রামের কৃষক আবু মাসুম বলেন অনেক টাকা খরচ করে আমরা বোরা চাষ করেছি। জমির ধান আর ১ মাস পর ঘড়ে উঠাবে। এ অবস্থায় মাঠের ভিতর দিয়ে ভেকো মেশিনে খাল খননের কাজ করা হচ্ছে, তাতে ক্ষেতের অনেক ধান নষ্ট হয়ে গেছে। হানাইল গ্রামের কৃষক মোশাররফ হেনের বলেন আগে জানলে আমরা খাল পাড়ে জমিতে ধান লাগামতামনা।
এখন আধাপাকা ধান কেটে খালের মাটি ভরাটের জায়গা খালি করে দিতে হচ্ছে। নয়তো ধান ক্ষেতের উপর মটি ফেলে ভরাট করছেন। সগুনা গোপীনাথপুর গ্রামের কৃষক ফেরদৌস বলেনবোরো ধান ঘরে তোলার আশায় দিন গুনছি, এরই মধ্যে খালের পাশে জমির একাংশ কেড়ে নিল পানি উন্নয়ন বোর্ড। অবশিষ্ট জমির ধানের উপরে তাদের ঠিকাদার মাটি ফেলে মাটি চাপা দিয়েছে। ছেলে মেয়ে নিয়ে আমি এখন দিশেহারা।
এ বিষয়ে ঠিকাদারের প্রতিনিধি মুক্তার হোসেন বলেন, আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গায় খাল খনন করছি কৃষকের জমিতে নয়। খনন কাজের সময় কম থাকায় বোরো ধান কোটা পর্যন্ত বিলম্ব করা সম্ভব হচ্ছে না। অল্প সময়ের মধ্যে আমাদের দ্রুত খনন কাজ শেষ করতে হবে। মাটি ফেলার সময় কিছু মাটি ধানের উপরে গড়িয়ে পরছে এতে আমার করার কিছু নেই।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশরী জাহিদুল ইসলাম বলেন, সরকারের নিতি মালা মেনে গত ফেব্রুয়ারী মাস থেকে খালটি পুনঃখননের কাজ শুরু হয়েছে এখন পর্যন্ত কৃষকের কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি, অভিযোগ পেলে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা প্রশাসক শরিফুল ইষলাম বলেন, কৃষকের ধানের ক্ষতি করে খাল খনন করা যাবে না। ক্ষতি করলে ঠিকাদারকে ক্ষতি পুরন দিতে হবে। বিষয়টি পানি উন্নয়ন বের্ডের নিবার্হী প্রকৌশলীকে জানানো হয়েছে।
আরবিসি/১৮ এপ্রিল/ রোজি