আরবিসি ডেস্ক : দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় (বুধবার সকাল ৮টা থেকে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা) করোনায় আক্রান্ত আরও ৯৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে দেশে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়াল।
গত ৩১ মার্চ মোট মৃত্যু ৯ হাজার ছাড়িয়েছিল। ৮ হাজার থেকে মোট মৃত্যু ৯ হাজার ছাড়াতে সময় লেগেছিল ৬৭ দিন। আর সর্বশেষ ১ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে মাত্র ১৫ দিনের ব্যবধানে। দেশে চলমান এই মহামারিকালে এটিই দ্রুততম সময়ে এক হাজার মৃত্যুর রেকর্ড। এর আগে ১ হাজার মৃত্যুতে সবচেয়ে কম সময়ে ১ হাজার মৃত্যুর রেকর্ড ছিল ২৩ দিন। মোট মৃত্যু ২ হাজার থেকে ৩ হাজার ছাড়াতে ২৩ দিন সময় লেগেছিল।
বিজ্ঞাপন
আজ বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আজ সকাল ৮টা পর্যন্ত মোট ১০ হাজার ৮১ জনের মৃত্যু হয়েছে করোনায়। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছেন ৪ হাজার ১৯২ জন। এ নিয়ে মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৭ লাখ ৭ হাজার ৩৬২।
গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন রোগী কমলেও পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার কমেনি। পরীক্ষা কম হওয়ায় নতুন রোগীও কম শনাক্ত হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ১৯ হাজার ৯৫৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষা বিবেচনায় রোগী শনাক্তের হার ছিল ২১ শতাংশ।
গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা শনাক্তের কথা জানায় সরকার। গত বছরের মে মাসের মাঝামাঝি থেকে সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে। আগস্টের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত শনাক্তের হার ২০ শতাংশের ওপরে ছিল। এরপর থেকে শনাক্তের হার কমতে শুরু করে।
গত জুন থেকে আগস্ট—এই তিন মাস করোনার সংক্রমণ ছিল তীব্র। মাঝে নভেম্বর-ডিসেম্বরে কিছুটা বাড়লেও বাকি সময় সংক্রমণ নিম্নমুখী ছিল। এ বছর মার্চে শুরু হয়েছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। প্রথম ঢেউয়ের চেয়ে এবার সংক্রমণ বেশি তীব্র। মধ্যে কয়েক মাস ধরে শনাক্তের চেয়ে সুস্থ বেশি হওয়ায় দেশে চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা কমে আসছিল। কিন্তু মার্চ থেকে চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যাও আবার বাড়তে শুরু করেছে।
কোনো দেশে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আছে কি না, তা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ঠিক করা কিছু নির্দেশক থেকে বোঝা যায়। তার একটি হলো রোগী শনাক্তের হার। টানা দুই সপ্তাহের বেশি রোগী শনাক্তের হার ৫ শতাংশের নিচে থাকলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে ধরা যায়। এ বছর ফেব্রুয়ারির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত শনাক্তের হার ৩ শতাংশের নিচে ছিল। দুই মাস পর গত ১০ মার্চ দৈনিক শনাক্ত আবার হাজার ছাড়ায়। এরপর দৈনিক শনাক্ত বাড়ছেই।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে। সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় গত ২৯ মার্চ বেশ কিছু বিধিনিষেধসহ ১৮ দফা নির্দেশনা জারি করেছে সরকার। এর মধ্যে ঘরের বাইরে গেলে মাস্কের ব্যবহার অন্যতম। কিন্তু সংক্রমণ আশঙ্কাজনকভাবে বাড়তে থাকলেও জনগণের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে এখনো উদাসীনতা দেখা যাচ্ছে। জনস্বাস্থ্যবিদেরা বলছেন, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে হলে মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মানার বিকল্প নেই।
আরবিসি/১৫ এপ্রিল/ রোজি