স্টাফ রিপোর্টার : দ্বিতীয় দফার কঠোর লকডাউনে’ পুরো ফাঁকা হয়ে পড়েছে বিভাগীয় জেলা শহর রাজশাহী। বুধবার সকাল থেকেই লকডাউন বাস্তবায়নে কঠোর অবস্থানে গেছে পুলিশ। ফলে কেউই বাড়ির বাইরে বের হতে পারেনি। নিতান্ত জরুরি প্রয়োজনে যারা রাস্তায় বের হচ্ছেন, তাদেরকে পুলিশের জেরার মুখে পড়তে হচ্ছে। যথাযথ কারণ দেখাতে ব্যর্থ হলে তাকে আবারও বাড়ি ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
তাই বিভাগীয় শহর রাজশাহীর পথঘাট এখন প্রায় জনশূন্য। ফাঁকা সড়কে রয়েছে কেবল পুলিশ। শহরের তিনটি প্রবেশমুখসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বসানো হয়েছে চেকপোস্ট। রাস্তায় দু’একটি রিকশা, মোটরসাইকেল এবং জরুরি সেবার গাড়ি চলাচল করতে দেখা যাচ্ছে।
বন্ধ রয়েছে শহরের সব মার্কেট, বিপণিবিতান এবং সব ধরনের দোকানপাট। শহরজুড়ে নেমে এসেছে যেন এক সুনসান নীরবতা। লকডাউনের কঠোরতায় পহেলা বৈশাখ বা বাংলা নববর্ষ উদযাপনের লেশ মাত্র নেই। মাহে রমজানের প্রথম দিন সবাই ঘরে থেকেই সিয়াম সাধনা করছেন।
বুধবার সকাল থেকে রাজশাহী মহানগরীর শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান চত্বর, শিরোইল বাস টার্মিনাল, রেলস্টেশন, নিউমার্কেট, সাহেববাজার জিরোপয়েন্ট, সোনাদীঘির মোড়, লক্ষ্মীপুরসহ কয়েকটি জনবহুল এলাকায় গিযে দেখা গেছে, রাস্তাঘাট একেবারেই মানুষ নেই। মূল সড়কে পিকআপ ভ্যান নিয়ে এবং পাড়া-মহল্লায় মোটরসাইকেল নিয়ে টহল দিচ্ছে পুলিশ। তবে, নিত্যপণ্যের দোকান, ওষুধের ফার্মেসি ও পেট্রোল পাম্প ও ব্যাংক খোলা রয়েছে। এছাড়া সব ধরনের ব্যবসায়ী দোকানপাট সকাল থেকে বন্ধ দেখা গেছে।
রাজশাহী মহানগরীর প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পুলিশ সদস্যরা অবস্থান নেওয়ায় কেউ রাস্তায় বের হলে পড়তে হচ্ছে জেরার মুখে। জরুরি কাজ থাকলে পুলিশ সদস্যরা তাকে দ্রুত কাজ শেষ করে ঘরে ফেরার নির্দেশনা দিচ্ছেন। এছাড়া শহরের তিন দিকের প্রবেশমুখ আমচত্বর, কাশিয়াডাঙ্গা ও কাটাখালী এলাকায় পুলিশ সদস্যরা কঠোরভাবে দায়িত্ব পালন করছেন। এসব পয়েন্ট নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয় গড়ে তুলেছে মহানগর পুলিশ।
রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু আসলাম বলেন, সরকার যে নির্দেশনা দিয়েছে সেভাবেই লকডাউন বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এ অবস্থায় কেউ অহেতুক বাইরে ঘোরাঘুরি করলে তাকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের শাস্তির মুখেও পড়তে হবে। তাই বিধিনিষেধের মধ্যে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া তিনি সবাইকে ঘরে থাকার আহ্বান জানান।
দেশে উচ্চহারে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় প্রথম দফায় মানুষের চলাচল ও কার্যক্রমে বিধি-নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।
এরপর বুধবার (১৪ এপ্রিল) থেকে আটদিনের জন্য ‘কঠোর লকডাউন’ ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। এই লকডাউনে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত সারাদেশে জরুরি সেবা দেওয়া প্রতিষ্ঠান ছাড়া সরকারি-বেসরকারি সব অফিস এবং গণপরিবহন বন্ধ থাকবে বলে ওই প্রজ্ঞাপনে নির্দেশনা জারি করেছে সরকার।
আরবিসি/১৪ এপ্রিল/ রোজি