আরবিসি ডেস্ক : মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউয়ে টালমাটাল ভারতে এবার একদিনে এক লাখ ৮৪ হাজার ৩৭২ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে বলে বুধবার দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
দেশটিতে এর আগে কখনোই ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এত রোগী পাওয়া যায়নি।
নতুন এক হাজার ২৭ মৃত্যু নিয়ে দেশটিতে করোনাভাইরাসে মৃত্যু সংখ্যাও এক লাখ ৭২ হাজার ৮৫ জনে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি, আনন্দবাজার।
গত বছরের অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহে সর্বশেষ দেশটি একদিনে হাজারের বেশি মৃত্যু দেখেছিল। এরপর থেকে ভারতে দৈনিক শনাক্ত ও মৃত্যু কমতে দেখা গেলেও এ বছরের মার্চ থেকে ওই চিত্র উল্টাতে শুরু করে।
বুধবার নিয়ে টানা চতুর্থ দিন দেশটিতে একদিনে দেড় লাখের বেশি রোগী মিলল; এক লাখের বেশি রোগী শনাক্ত হল টানা ৮দিন।
সব মিলিয়ে এক কোটি ৩৮ লাখের বেশি রোগী নিয়ে ভারতের অবস্থান এখন কেবলই যুক্তরাষ্ট্রের পেছনে; শনাক্ত রোগী সংখ্যায় দক্ষিণ এশিয়ার এ দেশটি চলতি সপ্তাহেই ব্রাজিলকে টপকে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে।
করোনাভাইরাসে ভারতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্য মহারাষ্ট্রে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ৬০ হাজারের বেশি রোগী মিলেছে, প্রাণ গেছে আরও ২৮১ জনের।
মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধভ ঠাকরে পশ্চিমাঞ্চলীয় এ রাজ্যটিতে বুধবার থেকে ১৫ দিনের কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছেন।
“করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ফের শুরু হল,” বলেছেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী।
মহারাষ্ট্রের পর দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য কেরালা, কর্ণাটক, তামিল নাডু ও অন্ধ্র প্রদেশে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি কোভিড রোগী শনাক্ত হয়েছে।
উত্তরাখণ্ডের হরিদ্বারে এ বছরের কুম্ভমেলাতে কোভিড বিধিনিষেধ অমান্য করেই লাখ লাখ মানুষ যোগ দিয়েছে। মঙ্গলবার শহরটিতে ৫৯৪ জনের দেহে প্রাণঘাতী ভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে।
দিল্লিতে একদিনে রেকর্ড ১৩ হাজার ৪৬৮ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে, মৃত্যু হয়েছে ৮১ জনের। মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল মাধ্যমিক পরীক্ষা বাতিল ঘোষণা করতে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
সংক্রমণের এমন উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে ভারত সরকার এখন পশ্চিমা বিভিন্ন দেশ ও জাপানে অনুমোদিত সব কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনকে দেশে জরুরি ব্যবহারে যত দ্রুত সম্ভব অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে দেশটিতে ফাইজার, জনসন অ্যান্ড জনসন ও মডার্নার টিকা আমদানির পথ খুলে যাবে।
রাশিয়ার বানানো স্পুৎনিক ভি টিকার জরুরি ব্যবহারেও ভারত অনুমতি দিয়েছে।
নরেন্দ্র মোদী ঘোষিত ‘টিকা উৎসবে’ মঙ্গলবারও দেশটিতে ২৬ লাখ ৪৬ হাজারের বেশি মানুষকে কোভিড-১৯ এর টিকা দেওয়া হয়েছে। ভারতে এখন পর্যন্ত কেবল অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিশিল্ড ও ভারত বায়োটেকের বানানো কোভ্যাক্সিনই দেওয়া হচ্ছে।
আরবিসি/১৪ এপ্রিল/ রোজি