আরবিসি ডেস্ক : উন্নয়নশীল দেশগুলোকে করোনা টিকা কিনতে ২০০ কোটি ডলার সহায়তা দেবে বিশ্বব্যাংক। এপ্রিলের শেষ নাগাদ উন্নয়নশীল ক্যাটাগরিভুক্ত ৪০ টি দেশকে এই সহায়তা দেওয়া হবে বলে শুক্রবার এক বার্তায় জানিয়েছেন বিশ্বব্যাংকের অপারেশন্স শাখার ব্যবস্থাপনা পরিচালক অ্যাক্সেল ভ্যান ট্রটসেনবার্গ।
বার্তায় ট্রটসেনবার্গ বলেন, করোনা টিকা কেনা ও গণটিকাদান কর্মসূচি পরিচালনা খাতে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে ধাপে ধাপে ১২০০ কোটি ডলার সহায়তা দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে বিশ্বব্যাংক। তার প্রথম ধাপে এই অর্থ ছাড় দেওয়া হবে।
এদিকে একইদিন বিশ্বব্যাংকের ঋণদাতা উন্নয়ন কমিটির এক বৈঠকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ঋণ ও অর্থ সহায়তা দানকারী এই প্রতিষ্ঠানটির প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস বলেছেন, বছরের মাঝামাঝি নাগাদ টিকা কেনা বাবদ ৫০ টি দেশকে ৪০০ কোটি ডলার অর্থ সহায়তা দেবে বিশ্বব্যাংক। তবে বৈঠকে উপস্থিত কমিটির অন্যান্য সদস্যরা সতর্ক করেছেন, সহায়তা পাওয়ার পর উন্নয়নশীল বিশ্ব যদি টিকাদান কর্মসূচি শুরু করতে বিলম্ব করে, সেক্ষেত্রে সহায়তার প্রধান উদ্দেশ্য ব্যর্থ হবে।
তাদের এই সতর্কবার্তার জবাব দিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) মহাব্যবস্থাপক তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস। তিনি বলেছেন, করোনাভাইরাস যদি দ্রুত ছড়াতে থাকে এবং ধারাবাহিকভাবে যদি এই ভাইরাসটির নতুন ধরনের আগমন ঘটতে থাকে, সেক্ষেত্রে বর্তমানে যে টিকাগুলো বাজারে পাওয়া যাচ্ছে, সেগুলোর কোনো কার্যকারিতা থাকবে না।
‘এমনকি যে দেশগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণ টিকা রয়েছে, তারাও নিরাপদ নয়। ইতোমধ্যে করোনার কয়েকটি নতুন ধরন এসেছে এবং ভবিষ্যতেও আসবে। সেগুলোর সামনে আমদের হাতে থাকা টিকাগুলো কার্যকর হবে কি না— তার কোনো নিশ্চয়তা এখনও নেই। যেসব দেশ প্রায় শতভাগ টিকাদান করেছে, তারাও এই ঝুঁকিতে আছে।’
এই সমস্যার কার্যকর সমাধান হিসেবে বিশ্বের দেশে দেশে এই ভাইরাস ও টিকা উন্নয়ন বিষয়ক গবেষণা ছড়িয়ে দেওয়া প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন তিনি। পাশাপাশি উন্নয়নশীল দেশগুলোর টিকা উন্নয়ন বিষয়ক গবেষণার প্রধান প্রতিবন্ধকতা হিসেবে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার মেধাস্বত্ব আইনের সমালোচনাও করেন ডব্লিউএইচও প্রধান।
এ বিষয়ে তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস বলেন, ‘মেধাস্বত্ব আইন বিষয়ক প্রতিবন্ধকতা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের টিকা উৎপাদনের ক্ষেত্রে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। একটা ছোট ঘরে হাতি ঢুকে থাকলে যে অবস্থা হয়, এখনকার অবস্থাও অনেকটা এরকম।’
‘বর্তমানে আমরা যে ভয়াবহ অবস্থায় আছি, পৃথিবীতে সম্ভবত এমন সময় অতীতে দেখা যায়নি। যদি এখনো আমরা সর্বাত্মকভাবে কাজ শুরু না করতে পারি, তাহলে কখন শুরু করব?’
আরবিসি/১০ এপ্রিল/ রোজি