স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহী অঞ্চলের বিভিন্ন উপজেলাগুলোতে সরকারি নিয়মনীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে পুকুর কিংবা জলাশয় ভরাট এর পাশাপাশি নিজেদের পকেটভারি করার উদ্দেশ্যে অবৈধভাবে কৃষিজমি নষ্ট করে পুকুর কিংবা দীঘি ভরাটের ঘটনা অহরহ।
সেই ধারাবাহিকতায় এবার বাগমারা উপজেলার সেউজবাড়ী গ্রামের প্রায় পাঁচবিঘা ফসলি জমির উপর অবৈধভাবে দীঘি খননের অভিযোগ উঠেছে। জমিটি সরকারি খাস জমি হবার পরেও অভিযুক্তরা ভেকু মেশিন ভাড়া করে দীঘিটি খনন করছে বলে অভিযোগ গ্রামবাসির। ফসলিজমি নষ্ট করে দীঘিখনন কাজ বন্ধ করার প্রেক্ষিতে গ্রামবাসির পক্ষে গোলাম রাব্বানী বাদী হয়ে বাগমারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযুক্তরা হলেন, ঐ উপজেলার চক সেউজবাড়ী গ্রামের রেজা, নুরুল, আনোয়ার ও এরশাদ সকলের পিতা মৃত মজিবর প্রাং। উক্তদীঘি খনন কাজ বন্ধ করাকে কেন্দ্র করে গ্রামবাসির মধ্যে চলছে অসন্তোষ।
লিখিত অভিযোগ ও গ্রামবাসির সূত্র থেকে জানাগেছে, উক্ত দীঘির খননস্থানে রয়েছে একটি মাঝারি আকৃতির ব্রীজ বা কালভার্ট। অনেক বছর ভোগান্তির পর উক্তস্থানে ব্রীজটি নির্মাণ করার ফলে দহ চক সেউজবাগী, সান্তপাড়া, গোয়ালীপাড়া, ভটখালিসহ আরো বেশকয়েকটি গ্রামের লোকজন চলাচলের জন্য উক্ত ব্রীজ ব্যবহার করে। এবাদুর, বাচ্চু, জাহাঙ্গীর, সুমন, মিঠু, রাব্বানী ও মহিদুর ছাড়াও অধিকাংশ গ্রামবাসি অভিযোগ করে বলেন, উক্ত সরকারি খাসজমিতে জোড়পূর্বক দীঘিখনন করাতে ইতিমধ্যেই হুমকিতে পড়েছে ব্রীজের পিলারের নিম্নাংশ। এছাড়াও উক্তস্থানে জোড়পূর্বক দীঘি খনন করার ফলে হুমকিতে পড়বে আশেপাশের কৃষিজমিগুলোও। মাটি দিয়ে উঁচু করে দীঘির চারিপাশের্^ বন্ধ করে দেবার প্রেক্ষিতে পানিনিষ্কাশন বন্ধ হয়ে আশেপাশের কৃষিজমি ও এলাকাগুলোতে তৈরি হবে জলাবদ্ধতা। অবৈধভাবে দীঘিখনন কাজ বন্ধ করার কথা বলতে গেলে গোলাম রাব্বানীসহ আরো বেশ কয়েকজনকে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করেন অভিযুক্তরা বলেও জানান ভুক্তভোগী রাব্বানীসহ গ্রামবাসি। গ্রামবাসি আরো জানান, অভিযুক্তরা প্রথমে সরকারি একটি বড় আকৃতির পুকুর ও পতিতজমি অবৈধভাবে নিজেদের কব্জায় নিয়ে নেন। কয়েকবছর পর উক্ত পুকুরটির পাশে সরকারি জমিতে দীঘিখনন কাজ আরম্ভ করে।
ভুক্তভোগী ও গরিব গ্রামবাসির দেওয়া তথ্যমতে, অভিযুক্তরা আট ভাই মিলে প্রায় আটবছর ধরে উক্ত ব্রীজ সংলগ্ন সরকারি খাস জমি কোন প্রকার টেন্ডার বা লিখিত অনুমতি ব্যতীরেকেই জোড়জবরদস্তি ভোগদখল করছেন। উক্ত স্থানটির পাশের্^ বড় আকৃতির একটি সরকারি পুকুর আছে, যেটা কিনা একসময় বেশ কয়েকটি গ্রামের গরিব কৃষকসহ সাধারণ মানুষ একত্রিতভাবে মাছ চাষ করতো। কিন্তু, ক্ষমতা ও পেশীশক্তির জোড়ে অভিযুক্তরা উক্ত স্থানের সরকারি পুকুর নিজেদের দখলে নিয়ে নেন। তারপর থেকে অভিযুক্তরা গ্রামের কোন মানুষকে সেখান থেকে মাছ ধরতে দেওয়াতো দূরের কথা; ঐ স্থানের আশেপাশেও ভীরতে দেয়না তারা। প্রায় পাঁচ বিঘার বেশি সরকারি খাসজমির উপর আবাদী জমি, পুকুর ও দীঘিটি অভিযুক্ত রেজা, নুরুল, আনোয়ার, এরশাদসহ তাদের লোকজন তারের বেড়া দিয়ে ঘিরে দিয়েছে। গ্রামের কোন ব্যক্তি সেখানে গেলে তাদের হাতে লাঞ্চনার স্বীকার হবার ঘটনা অহরহ বলে জানান ভুক্তভোগীরা। গ্রামের সাধারণ ও গরীব মানুষের দাবি, উক্ত সরকারি জমিটি আশেপাশের সকল গ্রামের মানুষ যেনো সকলের স্বার্থেই ব্যবহার করতে পারে সে ব্যবস্থা সংশ্লীষ্ট করে দিলে গ্রামের অসহায় ও গরীব মানুষেরা উপকৃত হবেন।
এবিষয়ে বাগমারা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিঁনি বলেন, দীঘি খননকাজ বন্ধ সম্পর্কীত একটি অভিযোগ পেয়েছি। করোনাকীলীন সময়ে যথাযথভাবে কাজ করা যাচ্ছেনা। তবে, সরেজমিনে গিয়ে বিষয়টি সম্পর্কে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য এসিরল্যন্ডকে বলা হয়েছে।
আরবিসি/০৯ এপ্রিল/ রোজি