• শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৬ পূর্বাহ্ন

পকেটে মাস্ক, মুখে নেই

Reporter Name / ২৬৫ Time View
Update : বুধবার, ৩১ মার্চ, ২০২১

জয়পুরহাট প্রতিনিধি: জীবন ও জীবিকার তাগিদে বিধি-নিষেধ এবং শর্ত দিয়ে সরকার খুলে দেয়েছে হাট-বাজারের দোকান, মার্কেট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো। সেইসঙ্গে গণপরিবহন চলাচলও স্বাভাবিক করে দিয়েছেন। সরকারের দেয়া বিধি-নিষেধ ও শর্ত কোথাও কেউ মানছে না।

করোনা মহামারীর সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে মাস্ক পড়া, সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কাজ কেউ তেমন করছেন না জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার নাগরিকরা। সরকার এক পরিপত্রে সবার জন্য মাস্ক পড়া বাধ্যতামূলক করে আদেশ জারি করেলেও এ উপজেলায় বিভিন্ন কর্মস্থলে, হাট-বাজার, মার্কেট, বিপণি-বিতান, গণপরিবহন, সামাজিক অনুষ্ঠান, রাজনৈতিক কর্মসূচি বা কর্মকান্ডে এবং রাস্তায় পথচারীরা এ নিয়ম নীতি মেনে তেমন চলছেনা। মাস্ক না পড়ার পেছনে নানা অজুহাত দাঁড় করাচ্ছেন অনেকেই, আবার না পড়ার কারণ জানতে চাইলে ক্ষেপে উঠছেন কেউ কেউ। মাস্ক পরলেই কি করোনাভাইরাস ঠেকানো যাবে? মাস্ক পড়লে দম বন্ধ হয়ে আসে, মাস্ক পড়লে ঠিকমতো কথা বলা যায়না, মাস্ক পড়লে বিরক্ত লাগে- এমন নানা অজুহাতে মাস্ক ছাড়াই ঘর থেকে বের হয়ে পড়ছেন কালাই উপজেলার নাগরিকরা। ফলে এ উপজেলায় প্রতিদিনই করোনারভাইরাস সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশস্কা রয়েছে।
সরেজমিনে উজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, এ উপজেলায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কোনো বালাই নেই। উপজেলার বিভিন্ন রাস্তাঘাটে পথচারীরারা গা ঘেঁষাঘেঁষি করে চলাচল করছেন। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চায়ের দোকান ও খাবার হোটেলগুলোতে আড্ডায় জমে থাকলেও কারো মুখে থাকেনা কোন মাস্ক।

দিনের বেলা কেউ মাস্ক পড়েছেন, আবার অনেকে পড়েননি, কেউ পকেটে রেখেছেন। কেউ আবার মুখ থেকে সরিয়ে থুঁতনিতে রেখে দিয়েছেন। অনেকেই এক কানে ঝুলে রেখেছেন। কখনও মুখ উন্মুক্ত করে শুধু নাকে, কখনও বা শুধু মুখে। আবার মাস্ক ব্যবহারের অযোগ্য হওয়া সত্ত্বেও অনেকেই একটি মাস্ক বারবার ব্যবহার করছেন। কেউ কেউ তো মাস্ক হাতেও বেঁধে রাখেছেন। আর স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও সামাজিক দূরত্ব মানার কোনো চিহ্নই পাওয়া যাচ্ছেনা।
উপজেলায় এ পর্যন্ত ১৯৭ জন মানুষের করোনা রোগি সনাক্ত হয়েছে এবং তি জন করোনায় মৃত্যু হলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়টি মোটেই তোয়াক্কা করছে না কেউ। আবার উপজেলার বিভিন্ন সড়কে বিপুল সংখ্যক ইজিবাইক, অটোরিকশা, বেটারি চালিত ভ্যান ও বাসে গা ঘেঁষাঘেঁষি করে লোকজন উঠানামা করে চলাচল করছেন।

বিভিন্ন হাট-বাজারের মুদি দোকানগুলোতে ভিড় করছে মানুষ। সেখানে সামাজিক দূরত্ব মানছে না কেউ। কালাই পৌরসভার ফুটপাতের মার্কেট, কাঁচাবাজার, ওষুধের দোকান ও বিপনী বিতানগুলো দোকানদাররা কোন স্বাস্থ্য বিধি মানছে না। আবার সেখানে ক্রেতারাও স্বাস্থ্যবিধি মানছেনা। যে যার মতো গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে থেকে জিনিসপত্র কেনাকাটা করছে।
মার্কেটের প্রবেশপথে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখার নির্দেশ থাকলেও তা পর্যাপ্ত নেই। প্রতিটি দোকানের সামনে হাত ধুয়ার হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখার নির্দেশ থাকলেও মানছে না দোকানিরা। মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব, মানা হচ্ছে না সরকারের দেয়া বিধি-নিষেধ কিংবা স্বাস্থ্যবিধি।

কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা আবু তাহের তানভীর হোসেন বলেন, করোনা ভাইরাসের টিকা আসার পর মানুষ এখন কিছুই মানে করছে না। মহামারি করোনা ভাইরাসের এ দুর্যোগে সময় সরকারের নিয়ম নীতি মেনে চলতে হবে।
এ উপজেলায় এ পর্যন্ত ১৯৭ জন মানুষের করোনা রোগী সনাক্ত হয়েছে এবং তিন জন করোনায় মৃত্যুও হয়েছে। করোনা মহামারীর সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা পেতে টিকা দেওয়া, মাস্ক পড়া, সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং স্বাস্থ্যবিধি মানানো ছাড়া কোনো উপায় নেই। আর মানুষকে বোঝাতে হবে, আসুন-সবাই মিলে করোনা নিয়ন্ত্রণ করি।

কালাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, উপজেলায় বিভিন্ন স্থানে মাস্ক না পড়া ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা কর হচ্ছে। সেইসঙ্গে উপজেলায় বিভিন্ন যানবাহনে মাস্কের ব্যবহার নিশ্চিতসহ মানুষের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি করার জন্য উপজেলা প্রশাসন সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। তবে করোনা থেকে মুক্তি পেতে হলে সবাইকে মাস্ক পড়া, শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাসহ স্বাস্থ্যবিধি যথযাথ ভাবে মেনে চলতে হবে।

আরবিসি/৩১ মার্চ/ রোজি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category