• শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:৫৫ পূর্বাহ্ন

কালের সাক্ষী রাবির ‘সুবর্ণজয়ন্তী টাওয়ার’

Reporter Name / ১৬৩ Time View
Update : বুধবার, ৩১ মার্চ, ২০২১

বিশেষ প্রতিবেদক : দেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। শিক্ষা, সংস্কৃতির পাশাপাশি ক্যাম্পাসের নান্দনিকতার জন্যেও এর পরিচিতি রয়েছে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি এই বিশ্ববিদ্যালয়টি যেমন দর্শনার্থীদের মণিকোঠায় স্থান করে নিয়েছে, স্বনামধন্য কিছু শিল্পীর সুনিপুণ কারুকাজে তৈরী বিভিন্ন স্থাপনা বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে এর উৎকর্ষ। তেমনি একটি দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা ‘সুবর্ণজয়ন্তী টাওয়ার’। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে জানাতে স্বগৌরবে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে টাওয়ারটি।

বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ পঞ্চাশ বছরের সময়ের উজ্জ্বল ইতিহাসকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য ২০০৩ সালের ২১ থেকে ২৩ ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হয় এক অনাড়ম্বর ‘সুবর্ণজয়ন্তী’ অনুষ্ঠান। সে সময়কালকে স্মৃতির মণিকোঠায় ধরে রাখার জন্য নির্মাণ করা হয় টাওয়ারটি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক দিয়ে প্রবেশ করতেই জোহা চত্বর। জোহা চত্বরের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে অগ্রণী ব্যাংকের পশ্চিম পাশে তাকালে দেখা মিলবে দৃষ্টিনন্দন এই সুবর্ণজয়ন্তী টাওয়ারটির। এটি ইস্পাতের তৈরি একটি ম্যুরাল। এতে তুলে ধরা হয়েছে সভ্যতার ক্রমবিকাশ। ইস্পাতের তৈরি এই ম্যুরালটির দিকে তাকালে দেখা যাবে নিপুণ কারুকাজে তৈরি টাওয়ারটির মাঝে আছে কয়েকটি পায়রা। কোনোটি ডানা মেলে আছে। মনে হবে এই বুঝি উড়াল দেবে। আবার কোনোটি ঝুপটি মেরে বসে আছে। টাওয়ারটির নিচে তাকালে দেখা যায় টাইলসে বাঁধানো চতুর্দিক ঘিরে ক্ষুদ্র এক জলধারা। দূর থেকে তাকালে পানির নৃত্য দেখা যায়। কাছে গিয়ে দেখা মিলবে জলধারায় ছোট ছোট মাছ।

টাওয়ারের খুব কাছেই ইস্পাতের একটি দেয়াল আছে। দেয়ালটির নাম ‘ইস্পাতের কান্না’। সেই দেয়ালে তাকালে দেখতে পাওয়া যাবে মালবাহী ভ্যান, ঘোড়ার গাড়ি, মানুষ, সাইকেল। যা দেখে যে কাউকে প্রাচীন গ্রামবাংলার ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে স্মরণ করতেই হবে। আছে স্মৃতিসৌধের মতো মহান এক কারুকাজ, যার নিচে আছে ফুটন্ত সূর্যমুখী ফুল। শহীদ মিনারের কারুকাজও করা আছে, আছে ইস্পাত দিয়ে তৈরি মুক্তিযোদ্ধার কারুকাজ, যা মহান মুক্তিযুদ্ধে একাত্তরের গণহত্যা মনে করিয়ে দেয়। সেই কারুকাজগুলো শিকল দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। দর্শনার্থীদের জন্য আছে টাওয়ারটির চারপাশে ঘিরে দেওয়া বসার সুন্দর জায়গা।

অপরূপ সুন্দর এই নান্দনিক স্থাপনার ভাস্কর শিল্পী মৃণাল হক। জানা যায়, দৃষ্টিনন্দন এই স্থাপনা নির্মাণ এবং তার পাশে একটি ম্যুরাল তৈরি করতে ব্যয় হয় প্রায় ১৫ লাখ টাকা।

এ বিষয়ে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা বলেন, টাওয়ারটি প্রায় ১০ বছর যাবৎ অবহেলিত অবস্থায় পড়ে ছিল। তবে বর্তমান প্রশাসন এটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয়। তারপর এর চারপাশে ছোট বাগান করা হয়েছে। টাওয়ারের নান্দনিকতা বৃদ্ধির জন্য মাত্র কয়েকদিন আগেই রঙ করা হয়েছে। টাওয়ারটির সৌন্দর্য ধরে রাখতে সব রকম ব্যবস্থা নেয়া হবে।

নির্মাণের সময় থেকেই মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে গৌরব আর ঐতিহ্যের জানান দিচ্ছে টাওয়ারটি। অসংখ্য ইতিহাসের স্মৃতিবিজড়িত হয়ে এভাবেই কালের সাক্ষী হয়ে থাকবে এই স্থাপনাটি। যত দিন থাকবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

আরবিসি/৩১ মার্চ/ রোজি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category