স্টাফ রিপোর্টার : সম্প্রতি মাল্টি লেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) বা ডিরেক্ট সেলস ব্যবসার ধরণ পাল্টিয়ে প্রতারণা করে যাচ্ছে কিছু কোম্পানী। অত্যন্ত লোভনীয়, অকল্পনীয় অফারের প্রলোভন দেখিয়ে সাধারণ মানুষকে আকৃষ্ট করছে তারা। এদের প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছে দেশের চাকুরী প্রত্যাশী বেকার যুবক-যুবতীরা।
রাজশাহীতে এমনই একটি এমএলএম কোম্পানি বেস্ট ওয়ান মার্কেটিং এজেন্সীর প্রতারনার ফাঁদে পড়েছে চাকুরী প্রত্যাশী বেকার যুবক-যুবতীরা। আকর্ষণীয় বেতনে চাকুরির নামে অর্থ হাতিয়ে নেয়াসহ অসহায়ত্বকে কাজে লাগিয়ে ৩৭ জন চাকুরী প্রত্যাশীদের জোড়পূর্বক আটক রাখার ঘটনা ঘটে।
বেস্ট ওয়ান মার্কেটিং এজেন্সীর এমন প্রতারনার বিষয়ে জানতে পেরে বোয়ালিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ নিবারন চন্দ্র বর্মন, পিপিএম এর নেতৃত্বে একটি টিম সোমবার রাত দেড়টায় দক্ষিণ দড়িখড়বোনা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। এসময় ৪ জন প্রতারককে গ্রেপ্তার করা হয়। এছাড়া তিনটি বাড়ী তল্লাশী করে মোট ৩৭ জন চাকুরী প্রত্যাশী বেকার যুবক-যুবতীকে উদ্ধার করে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, রাজশাহীর পুঠিয়ার মেছপাড়া জিউপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল মান্নান মন্ডলের ছেলে মোহাইমিনুল হক মিনু (২৪) ও তার স্ত্রী শিলা বেগম (২০), নাটোর জেলার সদর থানার জালালাবাদ গ্রামের আসলাম আলীর ছেলে শিমুর হোসেন (১৯) এবং রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার যষ্ঠিতলা গ্রামের রঞ্জন দাসের ছেলে রাকেশ দাস (৩০)।
এসময় ভূক্তভুগীদের থেকে জানা যায়, রাজশাহী মহানগরীতে বেস্ট ওয়ান মার্কেটিং এজেন্সী (এমএলএম) কোম্পানী চাকুরী প্রত্যাশী বেকার যুবক-যুবতীদের থেকে সিভির জন্য ৫৬০ টাকা এবং কোম্পানীতে যোগদানের জন্য এককালীন ৩৬ হাজার টাকা নেয়া হয়। যার মধ্যে থাকা-খাওয়ার জন্য ১৮ হাজার টাকা এবং পণ্য সামগ্রী ১৮ হাজার টাকা ধরা হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায় যে, কোম্পানী প্রতি জনের জন্য ব্যয় করে ১৩ হাজার ৫০০ টাকা। যার মধ্যে ৮ হাজার টাকা মূল্যের এলইডি মনিটর এবং ৫ হাজার ৫০০ টাকা মূল্যের একটি মোবাইল ফোনসেট। কোম্পানী প্রতি জনের নিকট হতে প্রতারণার মাধ্যমে ৪ হাজার ৫০০ টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়। বেকার যুবক-যুবতীরা নতুনকর্মী সংগ্রহ করে থাকে আর এই ভাবেই বেস্ট ওয়ান মার্কেটিং এজেন্সী বিপুল অর্থ আত্মসাত করছে।
এছাড়া কোম্পানীর কতিপয় সদস্যরা নগরীর দক্ষিণ দড়িখড়বোনা এলাকায় চাকুরী প্রত্যাশী বেকার যুবক-যুবতীদের বেকারত্বের অসহায়ত্বকে কাজে লাগিয়ে চাকুরি বা কাজ দেয়ার নামে কৌশলে প্রতারণামূলকভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে আটক করে রাখে।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের অক্টোবরে প্রণয়ন করা মাল্টিলেভেল মার্কেটিং কার্যক্রম (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে করা হয় বিধিমালা, যা আবার সংশোধন করা হয় একই বছরের ২২ জুলাই। আইন অনুযায়ী লাইসেন্স ছাড়া এমএলএম ব্যবসা করা যায় না। সরকারের অনুমোদন ছাড়া লাইসেন্স হস্তান্তর করতেও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। যে সমস্ত কোম্পানী ব্যবসা করছে এদের বেশিরভাগই বৈধ অনুমোদন নেই, অফিস নেই এবং দেশের প্রচলিত ব্যবসার সাথে কোন মিলও নেই।
আরবিসি/২২ মার্চ/ রোজি