• শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ০২:৪৭ অপরাহ্ন

রাজশাহীর বড়কুঠি হচ্ছে যাদুঘর

Reporter Name / ১৩৪ Time View
Update : শুক্রবার, ১৯ মার্চ, ২০২১

স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহী অঞ্চলের সর্বপ্রাচীন ইমারত বড়কুঠি। অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে পদ্মাপাড়ে নির্মিত এই ভবনটি এক সময় ছিল ডাচদের ব্যবসাকেন্দ্র। কালের পরিক্রমায় এখন অনেকটাই জরাজীর্ণ বড়কুঠি। তবে এটি সংস্কার ও সংরক্ষণ করে পূর্ণাঙ্গ জাদুঘরে রূপ দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

সর্বশেষ বৃহস্পতিবার প্রথম ধাপের সংস্কার ও সংরক্ষণ কাজ শুরু হয়েছে। রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন এটির সংস্কার কাজ শুরু করেন। প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর রাজশাহী ও রংপুর অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক নাহিদ সুলতানা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের আঞ্চলিক পরিচালক নাহিদ সুলতানা বলেন, ভবনটি ওলন্দাজরা নির্মাণ করেছিলেন। বিষয়টি মাথায় রেখেই ডাচদের ব্যবহৃত জিনিসপত্র, ছবি ও পেইন্টিং স্থান পাবে এখানে। ডাচদের ব্যবহৃত জিনিসপত্র, তথ্য-উপাত্ত কারও সংরক্ষণে থাকলে প্রদানের অনুরোধ জানান তিনি।

তিনি বলেন, ২০১৮ সালের মে মাসে বড়কুঠিকে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সংরক্ষিত পুরাকীর্তি হিসেবে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। কিন্তু করোনা মহামারির জন্য বড়কুঠির সংস্কার ও সংরক্ষণ কাজ থমকে যায়। প্রথম পর্যায়ে ৪ লাখ ৮৫ হাজার টাকার সংস্কার কাজ শুরু হলো।

ইতোমধ্যে বড়কুটিকে একটি প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে। সেই প্রকল্প থেকে বড় অঙ্কের অর্থ পাওয়া যাবে। সংস্কার ও সংরক্ষণের পর বড়কুঠিকে জাদুঘরে পরিণত করা হবে। কাজ শেষে জাদুঘরটি জনগণের জন্য খুলে দেওয়া হবে।

রাসিক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, বিশ্বের ‘আইকনিক সিম্বল’ হতে পারে রাজশাহীর পদ্মাপাড়ে গড়ে ওঠা সংরক্ষিত পুরাকীর্তি বড়কুঠি। রাজশাহীর পুঠিয়া রাজবাড়ি, বাগমারার তাহেরপুরের কংস নারায়ণের রাজবাড়িতে অবস্থিত মন্দিরসহ অন্যান্য প্রচীন স্থাপনা সংরক্ষণ করে বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরা গেলে এখানে দেশি-বিদেশি পর্যটকরা আসবেন।

তিনি জানান, ২০০৯ থেকে ২০১৩ মেয়াদে মেয়র থাকাকালীন বড়কুঠিকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষায় তিনি আপ্রাণ চেষ্টা করেন। তৎকালীন রাবি উপাচার্যকে রাসিকের অর্থায়নে এটি সংস্কারের প্রস্তাব দেন। কিন্তু সেই প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘদিন পর প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর বড়কুঠির সংস্কার ও সংরক্ষণে কাজ শুরু করায় ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা পাবে এই ঐতিহ্য। এটি পদ্মাপাড়ের অন্যতম দর্শনীয় স্থান হয়ে উঠবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে ভারত থেকে নিজেদের ব্যবসা গুটিয়ে নেয় ডাচরা। প্রকৃতপক্ষে জরুরি সময়ে বড়কুঠি দুর্গ হিসেবে ব্যবহার করত ডাচরা। সেই সময় শত্রুদের মোকাবিলায় ইমারতের ছাদে এবং নিচে প্রস্তুত থাকত বেশ কয়েটি কামান।

১৮১৪ সালে ইংরেজদের সঙ্গে চুক্তি করে বড়কুঠিসহ নিজেদের সকল ব্যবসাকেন্দ্র ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে হস্তান্তর করে ডাচরা। ১৮৩৩ সাল পর্যন্ত বৃটিশরাও বড়কুঠিকে ব্যবসাকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করে। ওই সময় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কামানগুলো অন্যত্র সরিয়ে নেয়। এখানকার তিনটি পুরাতন কামান এখনও রাজশাহী পুলিশ লাইন্সে সংরক্ষিত আছে। ১৯৫৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর বড়কুঠি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম শুরু হয়। এখনও ভবনটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিকানাধীন।

আরবিসি/১৯ মার্চ/ রোজি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category