আরবিসি ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, “আমরা চাই বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্রমুক্ত, উন্নত, সমৃদ্ধ সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে উঠুক। বাংলাদেশের একটি মানুষও ক্ষুধার্ত থাকবে না, গৃহহীন থাকবে না, প্রতিটি মানুষের ঘরে আমরা আলো জ্বালব।”
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে দশ দিনের আয়োজনের তৃতীয় দিন আজ শুক্রবার জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডের অনুষ্ঠানের বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার এই আহ্বান করেন।
তিনি বলেন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থানসহ সব দিকে বাংলাদেশের মানুষ যেন উন্নত, সমৃদ্ধ জীবন পায়, যেটা জাতির পিতার স্বপ্ন ছিল, যা তিনি সব সময়ই বলতেন।
“আসুন, জাতির পিতার এই ১০১ তম জন্মদিন আর স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে আমরা সেই প্রতিজ্ঞা নিই, জাতির পিতা যেই স্বপ্ন রেখে গেছেন, সেই স্বপ্ন আমরা বাস্তবায়ন করব। বাংলাদেশ হবে ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্রমুক্ত, উন্নত, সমৃদ্ধ, অসাম্প্রদায়ীক চেতনায় সোনার বাংলাদেশ, যে বাংলাদেশ জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করবে। দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাবে।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আজকে বাংলাদেশ আমরা উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে উন্নীত হতে পেরেছি। কাজেই এই বাংলাদেশে আজ জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্নজয়ন্তী আমরা সরকারে থেকে উদযাপন করার সুযোগটা পেয়েছি বাংলাদেশের মানুষের ভোটে নির্বাচিত হয়েছিলাম বলে। তাদের প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।”
যে বিদেশি অতিথিরা বাংলাদেশের দশ দিনের এই আয়োজনে যোগ দিয়েছেন, তাদেরও ধন্যবাদ জানান সরকারপ্রধান।
তার সভাপতিত্বে এদিনের অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ভি লাভরফও বাংলাদেশকে শুভেচ্ছা জানিয়ে একটি ভিডিও বার্তা পাঠিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আজকের অনুষ্ঠানে বন্ধুপ্রতীম শ্রীলঙ্কার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে আমাদের মধ্যে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়েছেন। আমাদের এই অনুষ্ঠানকে তিনি মহিমান্বিত করেছেন।”
শ্রীলঙ্কাকে বাংলাদেশের ‘ঘনিষ্ঠ বন্ধু দেশ’ হিসেবে বর্ণনা করে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কা বিভিন্ন আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক ইস্যুতে একই ধরনের মনোভাব পোষণ করে এবং দুই দেশ পরস্পরকে সমর্থন ও সহযোগিতা দিয়ে থাকে।
“প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে বাংলাদেশের একজন অকৃত্রিম বন্ধু এবং তিনি সবসময়ই বাংলাদেশের পাশে অবস্থান করেন। আমিও চেষ্টা করি সেই বন্ধুত্বের প্রতিদান দিতে।
“বাংলাদেশের জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসের যোগদান তার নিজের এবং শ্রীলঙ্কার জনগণের আমাদের মধ্যকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কেরই প্রতিফলন।”
প্রধানমন্ত্রী তার সরকার এবং বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ থেকে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রীকে এবং তার দেশের জনগণের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়ে আশা প্রকাশ করেন, দুই দেশের জনগণের এই বন্ধুত্বের সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরও দৃঢ় হবে।
অনুষ্ঠানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চারনেতা, মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদ এবং দুই লাখ নির্যাতিত মা-বোনের কথা স্মরণ করার পাশাপাশি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সালাম জানান বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকের নির্মম বুলেটে নিহত নিজের পরিবারের সদস্যসহ সেই রাতে নিহত সবার কথা গভীর বেদনার সঙ্গে স্মরণ করেন সরকার প্রধান।
আরবিসি/১৯ মার্চ/ রোজি