• শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:০২ পূর্বাহ্ন

রুনাইয়ের হিসাবের খোঁজে ৮০ প্রতিষ্ঠানে চিঠি

Reporter Name / ১৪৯ Time View
Update : মঙ্গলবার, ১৬ মার্চ, ২০২১

আরবিসি ডেস্ক : আলোচিত প্রশান্ত কুমার হালদারের (পিকে হালদার) ঘনিষ্ঠ বান্ধবী নাহিদা রুনাইয়ের সব ধরনের ব্যাংক হিসাব তলব করে ৮০টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। নাহিদা রুনাই ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন।

মঙ্গলবার (১৬ মার্চ) তার সব ধরনের ব্যাংক হিসাবের তথ্য চেয়ে এনবিআরের সিআইসি বিভাগ থেকে ওই চিঠি দেওয়া হয়েছে। এনবিআরের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

 

৮০টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর দেওয়া চিঠিতে নাহিদা রুনাইয়ের সঞ্চয় হিসাব, চলতি হিসাব, ঋণ হিসাব ও বিদেশি মুদ্রার হিসাব, ক্রেডিট কার্ড, ভল্ট, সঞ্চয়পত্র, ডিপোজিট স্কিম ও বিও (বেনিফিসিয়ারি ওনার্স) অ্যাকাউন্টসহ সব ধরনের হিসাবের তথ্য চাওয়া হয়েছে।

চিঠিতে নাহিদা রুনাইয়ের বাবা মফিজুর রহমান ও মা তাহমিনা খানমের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। আর ঠিকানা হিসেবে চট্টগ্রামের খুলশী ও ঢাকার রমনার দুটি ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছে। ২০১৩ সালের ১ জুলাই থেকে হালনাগাদ তথ্য বিবরণী সাত কার্যদিবসের মধ্যে পাঠাতে বলা হয়েছে ওই চিঠিতে। একইসঙ্গে আগে বন্ধ হয়ে যাওয়া হিসাবেরও তথ্য চেয়েছে এনবিআর।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, নাহিদা রুনাইয়ের অসীম ক্ষমতার উৎস ছিল পিকে হালদার। যার বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে প্রায় ৭২ কোটির টাকা লেনদেনের তথ্য রয়েছে। শুধু তাই নয়, অপর বান্ধবী অবন্তিকা ও রুনাইয়ের মধ্যে ছিল পিকে হালদারকে নিয়ে চরম প্রতিযোগিতা। তখন রুনাইকে বড় আপা ও অবন্তিকাকে ছোট আপা ডাকা হতো। কারণ রুনাই চালাত ইন্টারন্যাশনাল লিজিং এবং অবন্তিকা চালাত পিপলস লিজিং। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) হাতে গ্রেফতার হওয়া পিপলস লিজিংয়ের চেয়ারম্যান উজ্জ্বল কুমার নন্দীর গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতেও এমন তথ্য মিলেছে।

উজ্জ্বল কুমার নন্দীর বক্তব্যে উঠে এসেছে, পিকে হালদারের ঘনিষ্ঠ বান্ধবী ছিল অবন্তিকা বড়াল ও নাহিদা রুনাই। অবন্তিকা ও রুনাইয়ের সঙ্গে আলাদাভাবে ২০-২৫ বার সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ড ভ্রমণ করেছে পিকে হালদার। ঢাকার বিভিন্ন ক্লাবে রুনাই ও অবন্তিকার সঙ্গে পিকে হালদার আলাদাভাবে সময় কাটাত। অল্পসময়ে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছে রুনাই। কয়েক বছরে তার বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে প্রায় ৭২ কোটির টাকার লেনদেন হয়েছে।

নাহিদা রুনাইকে গত ২৫ জানুয়ারি দুদকের দায়ের করা পাঁচ মামলায় অন্যতম আসামি করা হয়েছে। পিকে হালদার কেলেঙ্কারিতে ৩৫০ কোটি ৯৯ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মোট ৩৩ জনের বিরুদ্ধে মামলাগুলো করা হয়।

অভিযোগ রয়েছে, পিকে হালদার পিপলস লিজিং, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড ও বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানির (বিআইএফসি) দায়িত্ব পালন করে প্রায় ৩৬০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচার করেছেন।

ক্যাসিনো অভিযানের ধারাবাহিকতায় প্রায় ২৭৫ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে পিকে হালদারের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। ক্যাসিনোবিরোধী শুদ্ধি অভিযানের পরপরই তার নাম উঠে আসে। গত ৮ জানুয়ারি দুদকের অনুরোধে পিকে হালদারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা দিয়ে রেড এলার্ট জারি করে ইন্টারপোল।

এছাড়া ৯ ফেব্রুয়ারি সাড়ে ২০ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও পাচারের সম্পৃক্ততায় পিকে হালদারের পাঁচ সহযোগীর বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। সর্বশেষ গত ৯ মার্চ কাগুজে প্রতিষ্ঠান দেখিয়ে ৮০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে আলোচিত পিকে হালদারসহ ৩৭ জনের বিরুদ্ধে ১০টি মামলা অনুমোদন দেয় সংস্থাটি।

এ কেলেঙ্কারিতে এখন পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছেন সাতজন। যাদের মধ্যে উজ্জ্বল কুমার নন্দী ছাড়াও পিকে হালদারের সহযোগী শংখ বেপারী ও রাশেদুল হক আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

আরবিসি/১৬ মার্চ/ রোজি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category