আরবিসি ডেস্ক : মিয়ানমারে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে অন্তত পাঁচ বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এমন খবর দিয়েছে।
১৯৮৮ সালে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে নিহত এক ছাত্রের মৃত্যুবার্ষিকী ঘিরে যখন জোরালো প্রতিবাদের ডাক দেওয়া হয়েছে, তখন নতুন করে এই প্রাণহানির খবর এসেছে।
শনিবার দেশটির দ্বিতীয় বৃহৎ শহর মান্দালায় পুলিশের এলোপাতাড়ি গুলিতে দুজন, কেন্দ্রীয় শহর পিয়ায় একজন ও বাণিজ্যিক রাজধানী ইয়াঙ্গুনে দুজন নিহত হয়েছেন।
এদিকে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশটিতে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও জাপান একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে।
বিক্ষোভ ও অসহযোগ আন্দোলনে নিরাপত্তা বাহিনীর ধরপাকড় বাড়লেও আন্দোলনকারীরা থেমে নেই।
এদিকে মিয়ানমারের ২০০ পুলিশ সদস্য ও তাদের পরিবার বর্তমানে প্রতিবেশী দেশ ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। শুক্রবার নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের বরাতে বার্তা সংস্থা এএফপি এমন খবর দিয়েছে।
এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, বিক্ষোভকারীদের মরধর ও নির্যাতন করছে কর্তৃপক্ষ। তাতে অংশ নিতে আমরা অনিচ্ছুক।
দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশটিতে বিক্ষোভে ধরপাকড়ের এখন পর্যন্ত ৭০ জনের নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
পুলিশের বহু কর্মকর্তা এই ধরপাকড়ে অংশ নিতে অস্বীকার জানিয়েছেন। তারা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় ভারতীয় রাজ্য মিজোরামে প্রবেশ করেন।
শুক্রবার পর্যন্ত ২৬৪ জন মিয়ানমারের নাগরিক পালিয়ে ভারতে চলে গেছেন। তাদের মধ্যে ১৯৪ জন পুলিশ কর্মকর্তা ও তাদের পরিবার।
সামরিক বাহিনীর অধীন পুলিশ বাহিনীতে কাজ করতে অনীহা থেকেই তারা ভারতে আশ্রয় নেন বলে এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
এদিকে মিয়ানমারে অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভ-আন্দোলন ঠেকাতে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে সেনা সরকার। রাজপথের বিক্ষোভ ঠেকাতে প্রতিদিনই গুলি চালানো হচ্ছে।
রাতের আঁধারে ঘরে ঘরে চালানো হচ্ছে তল্লাশি অভিযান। পুলিশ হেফাজতে হত্যা, গুম-খুন-অপহরণ চলছে অহরহ।
এবার টার্গেট করা হয়েছে অসহযোগ আন্দোলনে অংশ নেওয়া সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। ডাক্তার-নার্স-ইঞ্জিনিয়ার ও সরকারি চাকরিজীবীদের উদ্দেশে আগেই হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছিল, কাজে না ফিরলে ৮ মার্চের পর থেকে গণহারে বরখাস্ত করা হবে।
সেই রেশ ধরেই বুধবার দিনেদুপুরে অভিযান চালানো হলো ইয়াঙ্গুনের একটি বড় রেলস্টেশন ও রেলস্টাফ কলোনিতে। উচ্ছেদ করা হলো শতশত রেল পরিবারকে।
দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশটিতে ১ ফেব্রুয়ারি নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নেয় সামরিক জান্তা। প্রতিবাদে দুদিন পর থেকে নাগরিক অসহযোগ আন্দোলন শুরু করেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
চিকিৎসক ও শিক্ষকদের নেতৃত্বে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে চলমান এই আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করেছে বেসরকারি খাতের কর্মীরাও। জাতিসংঘের তথ্যমতে, সরকারের ১০ লাখ কর্মচারীর এক-তৃতীয়াংশই এখন কর্মবিরতি পালন করছে।
আরবিসি/১৩ মার্চ/ রোজি