• সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৪২ পূর্বাহ্ন
শীর্ষ সংবাদ
রাবির ৬ শিক্ষার্থীকে স্থায়ী বহিষ্কার, ৩৩ জনের নানা মেয়াদে শাস্তি রাজপাড়া থানার নতুন ভবন উদ্বোধন করলেন আরএমপি পুলিশ কমিশনার উপদেষ্টা হাসান আরিফের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতির শোক পাকিস্তানি চিনি, আলুসহ শিল্পের কাঁচামাল নিয়ে এলো সেই জাহাজ অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হাসান আরিফ মারা গেছেন রাজশাহীর চারঘাটে ট্রাক-মোটরসাইকেল সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৫ সার সঙ্কটে রাজশাহীতে ব্যাহত হচ্ছে আলুচাষ, দামও অতিরিক্ত রাজশাহীতে ফের বাস ও সিএনজি চালকের সংঘর্ষ, দুই পক্ষের মীমাংসা স্থগিত কিডনি রোগীর চিকিৎসা আর আইফোন কিনতে ডাকাতির চেষ্টা: পুলিশ তনুর গ্রাফিতিতে পোস্টার সাঁটানো নিয়ে যা বললেন মেহজাবীন

মহানন্দার ভাঙন হুমকিতে দুটি গ্রাম

Reporter Name / ১২০ Time View
Update : রবিবার, ৭ মার্চ, ২০২১

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: চাঁপাইনাবগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে সরকারি ইজারার নামে মহানন্দা নদী হতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব চলছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়ন ও গোবরাতলা ইউনিয়নের চাঁপাই-পলশা গ্রামে।

গ্রামবাসী প্রতিবাদ করলেও ভূয়া ইজারার কথা বলে জনবসতির ধারেই মহানন্দা নদীর কিনারা হতে মাত্র ৫০ গজ দূর থেকেই চলছে বালু উত্তোলন। যেটি বৈধ ইজারার সীমানার বাইরে গিয়ে নিয়ম বহির্ভূত।

নদীর এতো কাছ থেকে বালু উত্তোলনে নদী ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে পলশা উচ্চ বিদ্যালয়, জেলেপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পলশা-মহেশপুর পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির সেচ প্রকল্পসহ এ দুই গ্রামের নদীপাড়ের বাসিন্দারা।

গ্রামবাসীর অভিযোগ, বালিয়াডাঙ্গা-শ্রীরামপুর বালুমহলটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে ইজারা নিয়ে এর সীমানার বাইরে গিয়ে চলছে এসব অবৈধ বালু উত্তোলন। স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ ও জনপ্রতিনিধি এ অবৈধ বালু উত্তোলনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত। ইজারা সীমানার বাইরে হলেও ভাড়া নিয়ে এসব অবৈধ বালু উত্তোলনের অনুমোদন দিচ্ছে বালিয়াডাঙ্গা-শ্রীরামপুর বালু মহলের ইজারাদার বাদল ও তার সহযোগী কৃষক নেতা রুহুল আমিন।

সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়নের পলশা-চকঝগড়ু ঘাট থেকে গোবরাতলা ইউনিয়নের ঐতিহাসিক চাঁপাই জামে মসজিদ পর্যন্ত মাত্র আধা কিলোমিটার দুরুত্বের মধ্যেই অন্তত ৫টি স্থায়ী-অস্থায়ী বালুর পয়েন্টে তোলা হচ্ছে এসব অবৈধ বালু। পলশা-চকঝগড়ু ঘাট সংলগ্ন উত্তর পাশে গতবছর বালু উত্তোলনের কারনে নদীর কিনারা হতে মাত্র ৫০ গজের কম দূরত্বে যেখানে বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছিলো, ঠিক সেখান থেকেই এবছর আবারো পাহাড়সম বালু তুলেছে পলশা মধ্যপাড়া গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে জুয়েল ও সবুর আলী। এর কয়েক গজ উত্তরে গত কয়েকদিন থেকে বালু তুলছে পলশা গ্রামের জিয়াউর রহমান ও চকঝগড়ু গ্রামের হুমায়নের ছেলে জুয়েল রানা কালু।

টানা দীর্ঘদিন ধরে বালু উত্তোলনের ফলে পলশা উচ্চ বিদ্যালয়ের নিচে নদীর ধারে সম্প্রতি বড় কয়েকটি জায়গা নিয়ে বড় ধস হয়েছে।
অবৈধ বালু উত্তোলনকারী জুয়েল রানা কালু বলেন, আমরা বালিয়াডাঙ্গা-শ্রীরামপুর বালু মহলের ইজারাদারদের থেকে ভাড়া নিয়ে এসব বালু উত্তোলন করছি। বৈধ-অবৈধ এসব জানার দরকার নেয় আমাদের।

স্থানীয়দের দেয়া তথ্য মতে, পলশা ঈদগাহের পাশে বিদুৎ সংযোগ পারাপারের যে টাওয়ার রয়েছে তার নিচে নদী হতে এবছর বালু উত্তোলন করেছেন, পলশা উত্তরপাড়া গ্রামের আজিজুল মাস্টারের ছেলে মামুন আলী, বালিয়াডাঙ্গার আইনুল ইসলাম ও লালবাবু।
টাওয়ারের উত্তরে একটি এবং সাবরেজিস্টার মনিরুলের বাড়ির পাশে আরো একটি বালু পয়েন্ট থেকে বালু তোলা হয়েছে। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এ দুই বালু পয়েন্টের মালিক পলশা উত্তরপাড়া গ্রামের আজিজুল মাস্টারের ছেলে মামুন আলী, পলশা মিশনের তাইবুর রহমান, বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের ১, ২, ৩ নং ওয়ার্ড সদস্য বেদানা বেগমের স্বামী আমিরুল ইসলামসহ আরো কয়েকজন স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি।

জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে এ এলাকার বৈধ ইজারা নিয়ে ইজারাদারদের ম্যানেজ করে নির্দিষ্ট সীমানার বাইরে গিয়ে এভাবেই এ এলাকায় বালু উত্তোলন চলছে। এনিয়ে প্রতিকার চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী। তবুও মিলছে না কোন সমাধান।

এলাকাবাসী জানান, বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের ১, ২, ৩ নং ওয়ার্ড সদস্য বেদানা বেগমের স্বামী আমিরুল ইসলাম এলাকায় এসে বলেছেন, আমরা ইজারা নিয়েই বালু তুলছি। অসুবিধা হলে তোমরা গিয়ে ডিসিকে বলো। স্থানীয় একজন মহিলা জানান, কয়েক বছর আগে এখনে বালু উঠার কারণে বড় বড় কয়েকটি শিমুল গাছ ধসে বিলিন হয়েছে মহানন্দায়।
শিক্ষার্থী আব্দুল আহাদ জানায়, গ্রামবাসী নিষেধ করলেও শুনে না। এটি চলতে থাকলে এখানকার সমন্ত বাড়িঘর নদীর ভাঙনে বিলীন হবে।

এবিষয়ে ইউপি সদস্য ফজলে রাব্বি রেনু বলেন, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকসহ গ্রামবাসীর সাক্ষর নিয়ে তাদের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসককে অভিযোগ করেও কোন সমাধান পায়নি। এমনকি চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্যকে বারবার বলেও এ অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও প্রভাবশালীদের কারণে বালু উত্তোলন বন্ধ করা যাচ্ছে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আতিকুর রহমান জানান, এর আগেও চাঁপাই-পলশা গ্রামে ইজারা এলাকার বাইরে গিয়ে মহানন্দায় অবৈধ বালু উত্তোলনের অভিযোগ পেয়ে সরেজমিনে গিয়ে এর সত্যতা মিলেছে। যেহেতু ইজারাগুলো জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে হয়, তাই সেই কমিটিকে এ তদন্তের প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করা হয়েছে।

আরবিসি/০৬মার্চ/ রোজি

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category