• বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৫০ অপরাহ্ন

আজ ঐতিহাসিক ৭ মার্চ

Reporter Name / ১২৩ Time View
Update : রবিবার, ৭ মার্চ, ২০২১

আরবিসি ডেস্ক : আজ ঐতিহাসিক ৭ মার্চ। একাত্তর সালের এই দিনে মুক্তিকামী বাঙালী জাতিকে মুক্তির বাণী শুনিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। দীর্ঘ ২৪ বছরের লড়াই-সংগ্রামের পর বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের সেই ভাষণেরই পরিণতি স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। স্বাধীনতার ৫০ বছরেও মাত্র ১৮ মিনিটের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সেই ভাষণের আবেদন এতটুকু কমেনি। প্রজন্মের পর প্রজন্মের কাছে এই ভাষণ প্রেরণার উৎস। যতদিন যাবে নতুন প্রজন্মের কাছে ৭ মার্চের ভাষণ অনুপ্রেরণার সারথি হিসেবে কাজ করবে।

’৭৫ পরবর্তী দীর্ঘ একুশ বছর বঙ্গবন্ধুর যে ঐতিহাসিক ভাষণটি বাজানোর ওপর অঘোষিত নিষেধাজ্ঞা ছিল, সময়ের ব্যবধানে স্বাধীনতার ডাক সংবলিত বজ্রকঠিন বঙ্গবন্ধুর সেই ভাষণটিই আজ পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ ভাষণের স্বীকৃতি পেয়েছে। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণকে বিশ্ব প্রমাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে জাতিসংঘের শিক্ষা বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো। ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর ইউনেস্কো ৭ মার্চের ভাষণকে ‘ডকুমেন্টারি হেরিটেজ’ (বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য) হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। ইউনেস্কোর স্বীকৃতির পর বঙ্গবন্ধুর ভাষণটি এখন বিশ্ব ঐতিহ্যের অমূল্য দলিল। এ ভাষণ বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় বাংলাদেশের মানুষের গৌরব-সম্মান আরেকবার আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

তাই বাঙালী জাতি আজ কৃতজ্ঞ চিত্তে স্মরণ করবে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ বাঙালীর স্বাধীনতা-মুক্তি ও জাতীয়তাবোধ জাগরণের মহাকাব্য, বাঙালী তথা বিশ্বের সব লাঞ্ছিত-বঞ্চিত নিপীড়িত-নির্যাতিত মানুষের মুক্তির সনদ। ইতিহাসের ম্যাগনাকার্টার ৭ মার্চের ভাষণ বাঙালীর পরাধীনতার শৃঙ্খল মোচনের চূড়ান্ত প্রেরণা। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ বিশ্ব ঐতিহ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রামাণিক দলিল এবং বিশ্বে সর্বাধিকবার প্রচারিত ও শ্রবণকৃত ভাষণ।

বছর ঘুরে এবার সত্যিই এক মাহেন্দ্রক্ষণে বাঙালীর জীবনে এসেছে অগ্নিঝরা মার্চ। বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের স্বাপ্নিক স্থপতি ও সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে পালিত হচ্ছে মুজিববর্ষ। আগামী ২৬ মার্চ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর নানা কর্মসূচী উদযাপিত হবে বছর জুড়েই। মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী সামনে রেখে এবারের অগ্নিঝরা মার্চ মাস বিশেষ তাৎপর্য বয়ে এনেছে পুরো জাতির জীবনে। পুরো বছর ধরে কৃতজ্ঞ বাঙালী জাতি নানা আনুষ্ঠানিকতায়, অনুষ্ঠানে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে বাংলাদেশ নামক ভাষাভিত্তিক জাতিরাষ্ট্রের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।

আজ থেকে ৫০ বছর আগের কথা। ১৯৭১ সালে পরাধীনতার দীর্ঘ প্রহর শেষে পুরো জাতি তখন স্বাধীনতার জন্য অধীর অপেক্ষায়। শুধু প্রয়োজন একটি ঘোষণার, একটি আহŸানের। অবশেষে ৭ মার্চ এলো সেই ঘোষণা। অগ্নিঝরা একাত্তরের এইদিনে বাংলাদেশের স্বাধীনতা নামক মহতী কাব্যের ¯্রষ্টা কবি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বজ্রগম্ভীর কণ্ঠ থেকে ধ্বনিত হয়েছিল স্বাধীনতার ঘোষণা।
বঙ্গবন্ধু শুধু স্বাধীনতার চূড়ান্ত আহŸানটি দিয়েই ক্ষান্ত হননি, স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে মুক্তিযুদ্ধের রূপরেখাও দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর এ ঘোষণা মুক্তিকামী মানুষের কাছে লাল-সবুজ পতাকাকে মূর্তিমান করে তোলে। আর এই মাধ্যমে বাঙালীর ইতিহাসে এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হয়। শুধু স্বাধীনতা যুদ্ধে নয়, বঙ্গবন্ধুর সেই বজ্রনির্ঘোষ আজও বাঙালী জাতিকে উদ্দীপ্ত করে, অনুপ্রাণিত করে। মূলত রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধুর সেই ভাষণই ছিল ৯ মাসব্যাপী বাংলার মুক্তি সংগ্রামের মূল ভিত্তি।

ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) মুক্তিপাগল জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে দেয়া বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক এই ভাষণ থেকেই মূলত স্বাধীনতার অঙ্কুরোদগম ঘটতে থাকে এ বাংলায়। বাঙালীর নিজের দেশের হাজার বছরের স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নেয়ার অবশ্যম্ভাবী পরিণতির দিকে এগুতে থাকে। আজ সেই ঐতিহাসিক দিন, ৭ মার্চ। বাঙালী জাতির ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা একটি অনন্য সাধারণ দিন।

দেখতে দেখতে বাংলাদেশ নামক স্বাধীন রাষ্ট্রের বয়স ৫০-এ ঠেকছে। আগামী ২৬ মার্চ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। সময়ের বিবর্তনে অনেক কিছুই কালের গর্ভে হারিয়ে গেছে। বিকৃতির নিকৃষ্ট ষড়যন্ত্রের আবহে বদলে ফেলার চেষ্টা হয়েছে স্বাধীনতার অনেক ইতিহাস। কিন্তু এই ৫০ বছরে অনেক কিছুই বদলে গেলেও বদলানো যায়নি শুধু মাত্র ১৮ মিনিটের বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক সেই ভাষণটি। বিশ্বের অনেক মনিষী বা নেতার অমর কিছু ভাষণ আছে। বিশ্বের মধ্যে এই একটি মাত্র ভাষণ যা যুগের পর যুগ, বছরের পর বছর, ঘণ্টার পর ঘণ্টা বেজে চলেছে- কিন্তু ভাষণটির আবেদন আজও এতটুকু কমেনি।

বরং যখনই প্রজন্মের পর প্রজন্ম এই ঐতিহাসিক ভাষণটি শ্রবণ করেন, তখনই তাদের মানষপটে ভেসে ওঠে স্বাধীনতার গৌরবগাথা আন্দোলন-সংগ্রামের মুহূর্তগুলো, আত্মপ্রত্যয়ী হয়ে ওঠে দেশপ্রেমের আদর্শে। ৫০ বছর ধরে একই আবেদন নিয়ে একটানা কোন ভাষণ এভাবে শ্রবণের নজির বিশ্বের ইতিহাসে নেই। নানা গবেষণার পর মাত্র ১৮ মিনিটের বঙ্গবন্ধুর এই ঐতিহাসিক ভাষণটি আন্তর্জাতিকভাবে বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ ভাষণের অন্যতম হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।

আরবিসি/০৭ মার্চ/ রোজি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category