স্টাফ রিপোর্টার : ফুলের মুহু মুহু ঘ্রাণ সবাইকে মাতোয়ারা করে তোলে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ক্যাম্পাসে হাটলে যেনো মন মাতোয়ারা করে তুলছে নানা প্রজাতির ফুলের ঘ্রাণ। ফাগুনের বাহারি ফুলে ভরে উঠেছে পুরো ক্যাম্পাস। রাজ্যের সব ফুল যেন এখানেই জড়ো হয়েছে। ক্যাম্পাসের যেদিকে তাকানো যায় সেদিকেই এখন বিচিত্র সব বর্ণাঢ্য ফুলের সমারোহ। বিস্তৃত জায়গা জুড়ে লাল, সাদা, হলুদ রঙে যেন ছেয়ে গেছে ক্যাম্পাস।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতেই হাতের ডান পাশে তাকালেই দেখা যাবে রঙবেরঙের নানা ফুল। একটু সামনে এগিয়ে যেতেই হাতের ডান পাশের সুবর্ণ জয়ন্তী টাওয়ারকে ঘিরে রয়েছে দৃষ্টিনন্দন আরও একটি বাগান। জোহা চত্বরের চারপাশে সৌরভ ছড়াচ্ছে নানা রঙের গাঁদা ফুল।
ক্যাম্পাস ঘুরে আরো দেখা যায়, ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে রোপন করা হয়েছে হরেক রকমের ফুলগাছ। গড়ে তোলা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন ফুল বাগান। সিনেট ভবনের পাশে, প্যারিস রোডের ধারে, উপাচার্য ভবন, চারুকলা প্রাঙ্গন, বেগম রোকেয়া হল, মন্নুজান হল, শেখ মুজিবুর রহমান হল, শেরে বাংলা একে ফজলুল হক হল, মতিহার হল, শহীদ মীর আব্দুল কাইয়ুম ইন্টারন্যাশনাল ডরমেটরির সামনেসহ ক্যাম্পাসের প্রতিটি একাডেমিক ভবন ও আবাসিক হলের ভেতরের প্রতিটি স্থানে রোপন করা হয়েছে হরেক রকমের ফুলগাছ।
এসব বাগানে ফুটেছে রঙবেরঙের নানা প্রকৃতির ফুল। তার মধ্যে রঙ্গন, সিলভিয়া, গাঁদা, চায়না গাঁদা, গোলাপ, খয়েরি গোলাপ, তাজমহল, বিশ্বসুন্দরী, বড় বিশ্বসুন্দরী, চন্দ্রমল্লিকা, মোরগ ঝুঁটি, জিনিয়া, দোপাটি, হাইব্রিড দোপাটি, জুঁই, চামেলী, টগর, জবা ও পাতাবাহার অন্যতম।
এদিকে বসন্তে ক্যাম্পাসের প্রকৃতিতে রক্তিম পলাশ, শিমুল নতুনত্ব এনে দিয়েছে। আম আর লিচুর মুকুল যোগ করেছে অন্যরকম সৌন্দর্য্য। লাল ফুলগুলো সবুজ ঘাসের উপর পরে যেন লাল-সবুজের অভ্যর্থনা জানাতে ব্যস্ত। রাকসু ভবন এবং চারুকলার পলাশ চত্ত্বরের সামনে পলাশ ফুলের ঝড়ে পরা পাপড়ি দেখে মনে হয় যেন এক পুষ্পশয্যা। এসব জায়গায় বসে কেউ মনের সুখে সেলফি তুলে সময় পার করছে।
বাগান পরিচর্যার দায়িত্বে থাকা মালি লালু মিয়া বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে এবার প্রায় ১৫ প্রজাতির ফুল গাছ লাগানো হয়েছে। অনেক গাছে ফুল ফুটেছে আবার কোনটাতে এখনও ফুটেনি। সাধারণত অক্টোবর-নভেম্বর মাসে এসব গাছ লাগানো হয়। জানুয়ারির শেষের দিকে ফুুল ফুটতে শুরু করে। মার্চের শেষের দিকে ঝরে পরে এসব ফুল।
ক্যাম্পাসে ঘুরতে আসা চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থী শারমিন ইসলাম কনা বলেন, সাজানো গুছানো ক্যাম্পাস হিসেবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়কে আমার কাছে এক টুকরো স্বর্গ মনে হয়। বর্তমানে ফুলে ফুলে ভরে উঠেছে ক্যাম্পাসের চারপাশ। ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলেই যেন মনে হয় কোনো এক ফুলের রাজ্যে প্রবেশ করেছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ফাঁকা জায়গায় এবারে নতুন করে ফুলের বাগান করা হয়েছে। বিভিন্ন প্রজাতির এই ফুলগুলো ফাঁকা জায়গাগুলোকে আরও দৃষ্টিনন্দন করে তুলেছে। পাশাপাশি গোলাপ, রঙ্গন, সিলভিয়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফুল গাছ লাগানো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘুরতে আসা দর্শনার্থী, শিক্ষার্থীরা এর সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হয়। বিভিন্ন প্রজাতির ফুলের সমারোহে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস সৃষ্টি করেছে এক মনোমুগ্ধকর পরিবেশ।
আরবিসি/০৫ মার্চ/ রোজি