চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল পৌর এলাকায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের বাড়ি পুরুষশূন্য। আওয়ামী লীগের দুইশতাধিক নেতাকর্মী-সমর্থকদের নামে থানায় মামলা, গ্রেফতার হয়েছেন ১৪ জন। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি নাচোল পৌরসভা নির্বাচন পরবর্তী এসব ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রবিবার পৌর নির্বাচনের পরের দিন সোমবার রাতে আওয়ামী লীগের বিজয়ী মেয়র আব্দুর রশিদ খান ঝালু ও আওয়ামী লীগের পরাজিত বিদ্রোহী প্রার্থী রেজাউল করিম বাবুর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে।
এসময় পুলিশ কনস্টেবল আজমল হকসহ মেয়র ঝালু খান গ্রুপের ৩ জন আহত হন। আহত হয়েছেন নাচোল উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহম্মেদ বাবু, নাচোল মধ্য বাজার পাড়ার মুন্না (২৪) ও মুক্তার হোসেন (২৩)।
স্থানীয় সূত্রে আরও জানা যায়, সোমবার সন্ধ্যায় নাচোল বাসস্ট্যান্ড মোড়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম-সম্পাদককে এ জোহা পলাশের সাথে উপজেলা আ’লীগের প্রবীণ নেতা বানী ইসরাইল মাস্টারের কথা কাটাকাটি হয়।
পরে নবনির্বাচিত মেয়র ঝালু খানসহ আওয়ামী লীগ দলীয় নেতাকর্মীরা ঘটনাস্থলে গেলে পুলিশ তার সমর্থকদের উপর লাঠিচার্জ করে। পুলিশি বাধার মুখে মেয়রসহ তার লোকজন নাচোল বাজার হাটচাতালের পাশে জমায়েত হলে পুলিশ আবারও তাদের উপর বেধড়ক লাঠিচার্জ করেন বলে মেয়র অভিযোগ করেন।
এসময় পুলিশের লাঠিচার্জে আহত উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহম্মেদ বাবুকে পিকআপ ভ্যানে উঠানো হলে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ফারুক বাবুকে পুলিশের গাড়ি থেকে নামিয়ে নাচোল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। বাবুর অবস্থা গুরুত্বর হওয়ায় তাকে দ্রুত রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
এ ঘটনায় আহত পুলিশের কনস্টেবল আজমল হককেও প্রাথমিক চিকিৎসার পর রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এরপর গভীর রাতে এএসপি গোমস্তাপুর সার্কেল, ডিবি ও থানা পুলিশ যৌথভাবে ৫টি টিমে ভাগ হয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে দরজা ভেঙ্গে বর্বোরোচিত হামলা চালিয়েছেন বলে সাংবাদিকদের জানান উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জান্নাতুন নাইম মুন্নি।
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের উপর হামলা ঘটনায় মঙ্গলবার সকালে উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জান্নাতুন নাইম মুন্নির নেতৃত্বে প্রায় শতাধিক মহিলা নাচোল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবিহা সুলতানার নিকট একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন। স্বারকলিপিতে তারা নাচোল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সেলিম রেজা ও এসআই গোলাম রসুলের বদলীসহ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানান।
এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ২ শতাধিক ব্যাক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন বলে একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে। তবে ওসি সেলিম রেজা এ বিষয়ে সাংবাদিকদের কাছে কোন তথ্য দিতে অপরাগতা প্রকাশ করেন।
বিষয়টি নিয়ে নাচোল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবিহা সুলতানা জানান, এটি একটি অনাকাঙ্খিত ঘটনা। বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসকের সাথে কথা বলেছি। তিনি ও জেলা পুলিশ সুপার বিষয়টি সমাধানের জন্য ইতোমধ্যে উদ্যোগ নিয়েছেন।
আরবিসি/০২ মার্চ/ রোজি