স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপির সমাবেশ ঘিরে রাজশাহীর সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। সমাবেশ ঘিরে সহিংসতার আশঙ্কায় সোমবার দুপুরের পর থেকে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয় শ্রমিক ও মালিক পক্ষ।
এরপর থেকেই মহাসড়ক দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছে সিএনজিচালিত আটোরিকশা ও ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক। সুযোগ বুঝে বাড়তি ভাড়া আদায় করছেন চালক। নিরুপায় হয়ে তাতেই গন্তব্যে পাড়ি দিচ্ছেন লোকজন।
নওগাঁর মান্দা উপজেলার কুসুম্বা থেকে চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এসেছিলেন গোপাল (৪৫)। চিকিৎসা শেষে দুপুরের দিকে বাড়ি ফিরছিলেন। নগরীর রেলগেট এলাকায় ক্রাচে ভর দিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন।
রাজশাহী-নওগাঁ রুটের বাস কাউন্টার এখানে। কিন্তু অন্যান্য দিনের মতো এখানে বাস হেলপারদের হাঁকডাক নেই। পুরো এলাকা আটোরিকশার দখলে। গোপাল জানান, বাস বন্ধ থাকায় সিএনজিচালিত আটোরিকশায় বাড়ি ফিরতে হবে। কিন্তু চালক ৪০ টাকার ভাড়া ৮০ টাকা চাইছেন। তিনি তাতে রাজি হননি। তাই দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। বাস বন্ধের সুযোগে বাড়তি ভাড়া নিচ্ছেন অটোরিকশাচালকরাও।
একই চিত্র নগরীর রেলগেটের অপরপ্রান্ত বিন্দুরমোড়ের। সেখানে দাঁড়িয়ে আছে সারি সারি ইজিবাইক। রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ রুটের যাত্রীরা যাচ্ছেন ইজিবাইকে।
ইটভাটা শ্রমিক আব্দুল কাদের দলবল নিয়ে ফুটপাতে দাঁড়িয়েছিলেন। তারা জানান, ৭০ টাকার ভাড়া ১৫০ টাকা চাইছেন চালকরা। এর কমে কেউ নিয়ে যেতে চাইছে না। তাই বাধ্য হয়ে কিছুটা কমের আসায় দাঁড়িয়ে আছেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঁচ রোগী এনেছিলেন অটোরিকশাচালক সিহাবুল ইসলাম রাসেল। কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি বাড়তি ভাড়া আদায়ের কথা স্বীকার করে বলেন, সবার মতো আমিও ৭০ টাকার ভাড়া ১৫০ টাকা নিচ্ছি। অন্যদিন এই রুটে চলাচল করতে পারি না। আজ সুযোগ পেয়েছি।
এদিকে নগরীর শিরোইল বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা গেছে, কাউন্টারগুলো খোলা থাকলেও কোনো টিকিট বিক্রি নেই। কোনো গাড়িও রাজশাহী থেকে ছেড়ে যাচ্ছে না, বাইরে থেকে রাজশাহীতে কেউ ঢুকছে না। অস্থায়ী কাউন্টারগুলো তুলে দেওয়া হয়েছে।
রাজশাহী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মাহাতাব হোসেন চৌধুরী বলেন, বিএনপি জ্বালাও পোড়াও রাজনীতি করে। আমাদের আগে অনেকবার জামায়াত-শিবির গাড়ি পুড়িয়েছে। তাই আমাদের গাড়ির নিরাপত্তার জন্য, জীবনের নিরাপত্তার জন্য, জনগণের নিরাপত্তার জন্য গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।
তবে জনগণের ভোগান্তি কমাতে কিছু করা যায় কিনা তা ভেবে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র গোলাম রুহুল কুদ্দুস।
আরবিসি/০২ মার্চ/ রোজি