স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহীর বাগমারা প্রেসক্লাবের সভাপতি আলতাফ হোসেন মন্ডলের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মিথ্যা মামলা দায়ের করায় প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে নিন্দা ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারসহ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়েরকৃত মামলার আসামীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবী জানানো হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলা থেকে রক্ষা পেতেই মিথ্যা মামলার পথ অবলম্বন করেছে চাঁদাবাজি মামলার বাদি আবুল কালাম বলে দাবি করা হয়।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি নিজের স্বার্থে ব্যাঘাত ঘটায় আবুল কালাম নামের এক ব্যক্তিকে দিয়ে সাজানো ভিডিও তৈরি করে তা ফেসবুকসহ বিভিন্ন গ্রুপে আপলোড দেয় চক্রটি। ওই ঘটনায় প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। পাশাপাশি ভিডিও প্রদানকারী ব্যক্তির নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন আলতাফ হোসেন মন্ডল। যা বর্তমানে সিআইডির আইটি বিভাগের তদন্তে রয়েছে।
এদিকে ভিডিও প্রদানকারীর পরিচয় নিশ্চিত করার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করেন সাংবাদিক আলতাফ হোসেন মন্ডল। পুরস্কার ঘোষনার এক দিন পর এক ব্যক্তির মাধ্যমে তার পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়। ভিডিও প্রদানকারীর পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর বাগমারা থানার ওসিকে অবহিত করা হয়। পরে বাগমারা থানার ওসি হাট-গাঙ্গোপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ রফিকুল ইসলামকে তদন্তের দায়িত্ব প্রদান করেন। বিষয়টি আমলে নিয়ে দ্রুত খুঁজে বের করা হয় ভিডিও প্রদানকারী আবুল কালামকে। আবুল কালামকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হাট-গাঙ্গোপাড়ার পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে নেয়া হয়। সেখানে আবুল কালাম বলেন, আমি বাগমারা প্রেসক্লাবের সভাপতি আলতাফ হোসেন মন্ডলকে ব্যক্তিগত ভাবে চিনি না। একটি চক্র আমাকে দিয়ে এসব কথা বলে নিয়েছে। প্রতারণার বিষয়টি জানার পরে ওই ব্যক্তি পুলিশ হেফাজতে নেয়।
এমন ঘটনার পর তারা সাংবাদিক আলতাফ হোসেনের সাথে মিমাংসার চেষ্টা করে। তাকে সাড়া দেননি আলতাফ হোসেন মন্ডল। ভিডিও ব্যক্তির পরিচয় নিশ্চিত করা হলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেয়া হবে বলে জানান আলতাফ হোসেন। এতে আবুল কালাম ভিডিও ধারণকারীর পরিচয় না বলে টাল বাহানা শুরু করে। এদিকে পুলিশ চাইলে যে কোন সময় থানায় হাজির করবেন মর্মে স্থানীয় আলম শেখ তার জিম্বায় নেন। এই ঘটনায় বাগমারা প্রেসক্লাবের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১ তারিখে বাগমারা থানায় একটি আইসিটি ধারায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
অভিযোগ দায়েরের পর এর প্রাথমিক সত্যতা প্রমান হওয়ায় ১৫ ফেব্রুয়ারি সেই অভিযোগটি নথিভুক্ত করা হয়েছে। মামলাটি নথিভুক্ত হওয়ার পরেও আসামীরা পুনরায় আপোষের চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়ে ১৬ ফেব্রুয়ারি রাজশাহীর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও আমলী আদালতে চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করলে আদালত মামলাটি পিবিআই রাজশাহীকে তদন্তের দায়িত্ব প্রদান করেন বলে জানাগেছে। আসামী পক্ষ বাগমারা প্রেসক্লাবের সভাপতি আলতাফ হোসেন মন্ডল মামলার কোন নোটিশ বা কপি এখনও পাননি।
এ ধরনের মিথ্যা মামলা সহ ভিডিও ভাইরালের ঘটনায় বাগমারা প্রেসক্লাবে বুধবার এক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিবাদ সভায় মিথ্যা মামলা দ্রুত প্রত্যাহার সহ অভিযুক্তদের আটকের দাবী জানানো হয়। অন্যথায় বাগমারা প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে মানববন্ধন সহ কঠোর আন্দোলন কর্মসূচী ঘোষাণা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বাগমারা থানার অফিসার ইনচার্জ মোস্তাক আহম্মেদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা মালার আসামীরা পলাতক রয়েছে। তবে আবুল কালাম বর্তমানে জিম্বায় রয়েছে। সম্পতি আদালতে দায়েরকৃত মামলার আগে আবুল কালাম মামলা করতে থানায় আসেননি। অপরদিকে বাগমারা প্রেসক্লাবের সভাপাতি আলতাফ মন্ডলের দায়ের কৃত অভিযোগটি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে নথিভুক্ত করা হয়েছে। দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বাগমারা প্রেসক্লাবের সভাপতির বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মিথ্যা মামলার ঘটনায় উপজেলা প্রশাসনের আইন শৃংখলা কমিটির মাসিক সভায় উত্থাপন করা হয়। উক্ত সভায় এমন মিথ্যা মামলা দায়েরের ব্যাপারে নিন্দা প্রকাশ করা হয়েছে।
আরবিসি/২৪ ফেব্রুয়ারি/ রোজি