আরবিসি ডেস্ক: স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকার, আলবদর, আলশামসের দুই হাজার ৫০৪ জনের তালিকা সরকারের হাতে। তালিকা চেয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সব জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও যুদ্ধকালীন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারদের চিঠি দেওয়ার পর এই সংখ্যা মন্ত্রণালয়ের কাছে এসেছে। মঙ্গলবার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির ১৮তম বৈঠকে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে কার্যপত্র থেকে জানা যায়, এর আগে সংসদীয় কমিটি রাজাকার ও স্বাধীনতাবিরোধীদের তালিকা যতটুকুই এখন পর্যন্ত পাওয়া গেছে, তা অবিলম্বে গেজেট আকারে প্রকাশের সুপারিশ করে। এরপর এই তথ্য জানানো হয়। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকার, আলবদর, আলশামস ও পিস কমিটির সদস্যদের সঠিক ও পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রণয়নের লক্ষ্যে একটি উপকমিটি গঠন করা হয়েছে। উপকমিটি থেকে তালিকা পাওয়া গেলে প্রাপ্ত তালিকাসহ যাচাই- বাছাই করে গেজেট আকারে প্রকাশের অনুরোধ জানিয়ে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের কাছে পাঠানো হবে।
এ বিষয়ে কমিটির সভাপতি শাজাহান খান সাংবাদিদকদের বলেন, ‘আমরা যাদের নাম পাচ্ছি তাদের তালিকা সংশ্লিষ্ট উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলে পাঠিয়ে দিচ্ছি। সেখান থেকে ভেরিফাই হয়ে আসছে। তারপর তালিকা করা হচ্ছে। আইনটা হয়ে গেলে তালিকা প্রকাশ করা হবে।’
প্রসঙ্গত, গত বছর বিজয় দিবসের আগে আংশিক তালিকা প্রকাশ করার কথা থাকলেও আইনি বাধ্যবাধকতায় তা সম্ভব হয়নি। জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের আইনের সংশোধন ছাড়া এটি প্রকাশ করা যাবে না বলে সরকার আইনটি সংশোধন করার উদ্যোগ নিয়েছে। আইন সংসদে পাস হলে তারা রাজাকারদের তালিকা প্রকাশ করবে বলে বৈঠকে জানানো হয়। এদিকে বৈঠকে সরকারি হাসপাতালে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা সেবা ৫০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭৫ হাজার টাকা করতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে মো. শাজাহান খান বলেন, ‘উপজেলা, জেলা, বিভাগীয় ও বিশেষায়িত সরকারি হাসপাতালে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা সহায়তা হিসেবে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিনামূল্যে সেবা দেওয়া হয়। আমরা এটা ৭৫ হাজার টাকা করতে বলেছি।’ তিনি বলেন, ‘ওষুধ কিনতে খুব বেশি টাকা লাগে না। চিকিৎসার মূল ব্যয় হয় স্বাস্থ্য পরীক্ষায়। সেজন্য আমরা এই টাকার পরিমাণ বাড়ানোর সুপারিশ করেছি।’
এদিকে মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হকের বরাত দিয়ে শাজাহান খান জানান, আগামী স্বাধীনতা দিবসের আগে মুক্তিযোদ্ধার তালিকা প্রকাশ করতে মন্ত্রণালয় প্রস্তুত আছে। তিনি বলেন, কমিটির বৈঠকে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। মন্ত্রী জানিয়েছেন, ২৬ মার্চের আগে তালিকা দিতে তাদের প্রস্তুতি আছে।
বৈঠকে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশের লক্ষ্যে জেলা ও উপজেলার সংশ্লিষ্ট সবার সমন্বয়ে যথাশিগগিরই চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের সুপারিশ করা হয়। পরবর্তী প্রজন্মকে অবহিত করার উদ্দেশ্যে বঙ্গবন্ধু কর্নার ও পাঠাগার স্থাপনের পরামর্শ দেওয়া হয়। শাজাহান খানের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম, কাজী ফিরোজ রশীদ এবং মোছলেম উদ্দিন আহমদ অংশ নেন।
আরবিসি/২৩ ফেব্রুয়ারি/ রোজি