• শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৩৮ অপরাহ্ন

সামরিক সরকারের হুমকির মুখে মিয়ানমারজুড়ে ধর্মঘট শুরু

Reporter Name / ২৬২ Time View
Update : সোমবার, ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

আরবিসি ডেস্ক : মিয়ানমারে সামরিক সরকারের কারফিউ, রাস্তা অবরোধ ও ব্যাপক গ্রেফতারের মধ্যেই সোমবার দেশ জুড়ে সাধারণ ধর্মঘট শুরু করেছে বিক্ষোভকারীরা। খবর আল জাজিরার।

ধর্মঘটে অতি প্রয়োজনীয় সেবা ছাড়া সকল প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হবে। গত ১ ফেব্রুয়ারি সামরিক বাহিনী অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের পর আজকের ধর্মঘটকে সবচেয়ে বড় প্রতিবাদ হিসেবে দেখা হচ্ছে। স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, অন্যান্য বেসরকারি খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে দেশের সবচেয়ে বড় খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান সিটি মার্টও এদিন বন্ধ থাকবে। বিক্ষোভ শুরুর পর থেকে সরকারি কর্মকর্তা, চিকিৎসক, শ্রমিকসহ বিভিন্ন পেশাজীবীরাও কাজে ইস্তফা দিয়ে ধর্মঘট অব্যাহত রেখেছেন।

২২/২/২০২১ তারিখ অনুযায়ী আজকের ধর্মঘটকে ২২২২২ বা ‘পাঁচটি দুই’ এর বিপ্লব হিসেবে ঘোষণা করা হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে বার্মা হিউম্যান রাইটস নেটওয়ার্কের (বিএইচআরএন) নির্বাহী পরিচালক কিয়াও উইন সোমবার সকালে এক টুইটার পোস্টে লেখেন, ‘বার্মায় ২২২২২ বিদ্রোহ শুরু হয়েছে এবং প্রতিটি শহরে লাখ লাখ মানুষ আজ রাস্তায় বের হয়ে আসছে। সামরিক বাহিনী দূতাবাস ও গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোয় ব্যারিকেড ও কাঁটাতার দিয়ে অবরোধ তৈরি করেছে।’

লধমড়হবংি২৪

সোমবার সকাল থেকে কারফিউ ভেঙে ইয়াঙ্গুনের রাস্তায় ছোট ছোট দলে বিক্ষোভকারীরা জড়ো হওয়া শুরু করেছেন। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বিক্ষভকারীদের সতর্কতা জানিয়ে বলা হচ্ছে, বিক্ষোভকারীরা ‘জনগণকে কঠিন পথের দিকে যেতে প্ররোচিত করছে যেখানে তারা জীবন হারাতে পারে’।

রোববার সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারী নিহত তরুণীর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় রাজধানী নেপিদোতে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হন। বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত তিনজন মারা গেছেন। এর মধ্যে প্রথম মৃত্যু হয় মিয়া থোয়ে থোয়ে খাইনের।

গত ৯ ফেব্রুয়ারি বিক্ষোভকারীদের একটি সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ গুলি চালালে খাইন মাথায় গুলিবিদ্ধ হন। দশদিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে ১৯ ফেব্রুয়ারি তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

রোববার খাইনের কফিন কালো ও সোনালি গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া হয়। গাড়ির সঙ্গে চলে শত শত মটরসাইকেল। এদিনও দেশ জুড়ে বিভিন্ন রাস্তায় জনতা বিক্ষোভ করেছে।

লধমড়হবংি২৪

জনগণের বিক্ষোভ সহিংসভাবে দমনের অভিযোগে বিশ্বজুড়ে মিয়ানমারের সামরিক জান্তার সমালোচনা চলছে। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী শক্তি প্রয়োগ, হুমকি ও হয়রানি অগ্রহণযোগ্য।’

সহিংসতার সমালোচনা করে রোববার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন টুইটারে এক বিবৃতিতে বলেন, ‘গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের পুনর্বহালের দাবি করা বার্মার জনগণের ওপর যারা সহিংসতা চালাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র কঠোর পদক্ষেপ অব্যাহত রাখবে।’

ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাব বলেছেন, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হাতে আটক দেশটির গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত নেতা অং সান সু চিকে অবশ্যই মুক্তি দিতে। এক টুইটার বার্তায় তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্র ধ্বংসকারী ও মতপ্রকাশে বাধা প্রদানকারীদের দমনে আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে নিয়ে আমরা পরবর্তী পদক্ষেপে যাব।’

এদিকে ধরপাকড় অব্যাহত রেখেছে সেনা সরকার। দ্য অ্যাসিসট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স (আপ) জানিয়েছে, অভ্যুত্থানের পর এখন পর্যন্ত ৬৪০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

রোববার দেশটির প্রখ্যাত অভিনেতা লু মিন সামরিক সরকারের সমালোচনা একটি ভিডিও পোস্ট করার পর তাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এছাড়া সংসদ সদস্য মিন্ট উকেও রাতে আটক করা হয়।

আরবিসি/২২ ফেব্রুয়ারি/ রোজি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category