• রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০:১২ অপরাহ্ন

পাপুলের রায় পর্যালোচনায় সংসদ

Reporter Name / ১৪৫ Time View
Update : শুক্রবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

আরবিসি ডেস্ক : কুয়েতে দণ্ডপ্রাপ্ত লক্ষ্মীপুরের সংসদ সদস্য কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলের রায় পর্যালোচনা শুরু করেছে জাতীয় সংসদ কর্তৃপক্ষ।

কুয়েতের আদালতের রায়ের কপি বৃহস্পতিবার সংসদে পৌঁছেছে বলে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, “রায়ের কপি আমাদের কাছে পৌঁছেছে। এটা পর্যালোচনা করে সংবিধান ও কার্যপ্রণালী বিধি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

কবে নাগাদ সিদ্ধান্ত জানা যাবে জানতে চাইলে স্পিকার বলেন, “সিদ্ধান্ত নিলে আপনারা জানতেই পারবেন।”

বাংলাদেশের সংবিধানের ৬৬(২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, কোনো আইনপ্রণেতা নৈতিক স্খলনজনিত কোনো ফৌজদারি অপরাধে দুই বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হল সংসদ সদস্য থাকার যোগ্য হবে না এবং মুক্তি পাওয়ার পর পাঁচ বছর পর্যন্ত তিনি আর সংসদ সদস্য হওয়ার যোগ্য বিবেচিত হন না। ওই অনুচ্ছেদেই বলা আছে, কোন বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব নিলে কিংবা কোন বিদেশি রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা বা স্বীকার করলে আর এমপি হিসেবে থাকতে পারবে না।

অর্থ ও মানবপাচার এবং ঘুষ দেওয়ার অভিযোগে গত বছর জুনে কুয়েতে গ্রেপ্তার হন লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য পাপুল। গত ২৮ জানুয়ারি তাকে চার বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে দেশটির একটি আদালত। বাংলাদেশের কোনো আইনপ্রণেতার এভাবে বিদেশে দণ্ডিত হওয়ার এটাই প্রথম ঘটনা।

এরপর আর তার সংসদ সদস্য পদ থাকতে পারে না বলে মনে করেন সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ।

পাপুল দণ্ডিত হওয়ার পর তিনি বলেছিলেন, “সংবিধানে যা বলা হয়েছে, সে ব্যাপারে সংসদকে ব্যবস্থা নিতে হবে। সংসদের কাছে রেকর্ড পৌঁছালে ৬৬ (২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সংসদ আসন শূন্য ঘোষণা করবে।”

কোনো আইনপ্রণেতা গ্রেপ্তার, আটক বা আদালতের রায়ে সাজা পেলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তা স্পিকারকে জানাতে হয়। পাপুল গ্রেপ্তার এবং সাজা পাওয়ার পর তা নিয়ম অনুযায়ী স্পিকারকে না জানানোয় সংসদ এতদিন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

পাপুলের বিষয়ে কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চাইলে সংসদ সচিব জাফর আহমেদ খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মামলার রায়ের কপি সংসদ পেয়েছে। এ বিষয়ে কাজও শুরু হয়েছে। স্পিকার মহোদয় এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।”

তার সংসদ সদস্য পদ খারিজ করা হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, “সংবিধানে আছে নৈতিক স্খলনজনিত ফৌজদারি অপরাধে দুই বছরের দণ্ড হলে তার সদস্যপদ থাকবে না। লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সদস্যের চার বছরের দণ্ড হয়েছে। তার সদস্যপদ থাকার কথা নয়। এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন স্পিকার।”

কবে নাগাদ সংসদের সিদ্ধান্ত জানা যাবে জিজ্ঞেস করলে সংসদ সচিব বলেন, “আশা করছি ২-৩ দিনের মধ্যে মাননীয় স্পিকার একটা সিদ্ধান্ত জানাবেন।”

সাধারণ শ্রমিক হিসাবে কুয়েত গিয়ে বিশাল সাম্রাজ্য পড়ে তুলেছিলেন পাপুল। তার মালিকানাধীন মারাফি কুয়েতিয়া কোম্পানি পরিচ্ছন্নতাকর্মী নেওয়ার কাজ করলেও কুয়েতে অন্যান্য ব্যবসার কাজও বাগিয়েছিলেন তিনি। কুয়েতে তার বসবাসের অনুমতি রয়েছে।

২০১৮ সালে লক্ষ্মীপুর-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন পাপুল। শুধু তাই নয়, নিজের স্ত্রী সেলিনা ইসলামকেও সংরক্ষিত আসনে সংসদ সদস্য করে আনেন তিনি।

পাচারের শিকার পাঁচ বাংলাদেশির অভিযোগের ভিত্তিতে গত বছর ৬ জুন রাতে কুয়েতের মুশরিফ এলাকা থেকে পাপুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে মানবপাচার, অর্থপাচার ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের শোষণের অভিযোগ আনে কুয়েতি প্রসিকিউশন। সেই অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়ে দণ্ডিত হয়েছেন তিনি।

আরবিসি/১৯ ফেব্রুয়ারি/ রোজি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category