• শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:২৩ পূর্বাহ্ন

বীর মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই : রাজশাহীর ১২৬ জনের বিরুদ্ধে আপত্তি!

Reporter Name / ১০২ Time View
Update : বুধবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

স্টাফ রিপোর্টার : মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটভুক্ত হওয়ার পরই সংশ্লিষ্টরা ভাতা পান। তবে গেজেট নিয়মিত করার সুপারিশ পাননি রাজশাহী মহানগর এলাকার ১২৬ জন। এদের মধ্যে ৮৪ জনের আবেদন সরাসরি নাকচ হয়েছে। ২৬ জন গেজেট নিয়মিত না করার কারণে তাদের ব্যাপারে সুপারিশ করা হয়নি। এছাড়া আটজনের ব্যাপারে দ্বিধাবিভক্তি সিদ্ধান্ত আসায় গেজেট নিয়মিত করার সুপারিশ করা হয়নি।

আর এর বাইরে আরও আটজনের ব্যাপারে অধিকতর যাচাই করে জাতীয় মুক্তিযুদ্ধ কাউন্সিলকে (জামুকা) সিদ্ধান্ত নিতে বলেছে কমিটি। বাকি ৩৪ জনকে বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেট নিয়মিত করারও সুপারিশ করা হয়েছে। এই তালিকা বুধবার রাজশাহী জেলা প্রশাসনের ওয়েবসাইটেও দেওয়া হয়েছে।

মোট ১৬০ জনের ব্যাপারে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই-বাছাই কমিটি ১৬ ফেব্রুয়ারি সুপারিশসহ প্রতিবেদন জামুকায় পাঠিয়েছে। গত ৬ থেকে ১০ ফেব্রুয়ারি রাজশাহীতে এই যাচাই-বাছাই শুরু হয়। চার সদস্যের মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির সভাপতি ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা সফিকুর রহমান রাজা। আর সদস্য সচিব ছিলেন রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মুহাম্মদ শরিফুল হক। অন্য দুই সদস্য হলেন রাজশাহীর বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবাল এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা চৌধুরী এস. মনিরুল ইসলাম।

যাচাই-বাছাই কমিটির সদস্য সচিব মুহাম্মদ শরিফুল হক বলেন, মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটভুক্তির জন্য ৩৩ ধরনের প্রমাণক প্রয়োজন। এর মধ্যে জামুকার সুপারিশও প্রয়োজন। কিন্তু রাজশাহী মহানগরীর ৫৫২ জন ভাতাভোগীর মধ্যে ১৬০ জনের ব্যাপারে জামুকার সুপারিশ ছিল না। এ কারণে তাদের ব্যাপারে যাচাই-বাছাই করতে বলা হয়। জামুকার নির্দেশনা অনুযায়ী যাচাই-বাছাই করে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে বলেও জানান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক।

এদিকে, সরাসরি নামঞ্জুর হওয়া ১১০ জনের মধ্যে ৮৪ জন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তাদের গেজেটে নিয়মিত করার জন্য আবেদন করেছিলেন। বাকি ২৬ জন আবেদনই করেননি। এমনকি যাচাই-বাছাই কমিটির সামনে তারা হাজিরও হননি। প্রতিবেদনের মন্তব্যের কলামে এ বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। আর ৮৪ জনের আবেদন যাচাই শেষে নামঞ্জুর করা হয়েছে বলে মন্তব্যের কলামে উল্লেখ করা হয়েছে।
আবেদন না মঞ্জুর হওয়াদের মধ্যে শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি নূর কুতুব আলম মান্নানের নামও আছে। ওই তালিকায় তার ক্রমিক নম্বর-৮৫। আবেদন বাতিলের তালিকায় আরও আছেন বিএনপির প্রভাবশালী নেতা কামরুল মনির, এরশাদ আলী ঈশা, নূর মোহাম্মদ পেনু, অ্যাডভোকেট অঙ্কুর সেন, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র রেজাউন নবী দুদু প্রমুখ।
আবেদন নামঞ্জুর হওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে জাতীয় শ্রমিক লীগ সভাপতি নূর কুতুব আলম মান্নান বলেন, ‘এতদিন পর বাতিল হয়ে গেলে কী করবেন। তিনি তো মুক্তিযুদ্ধের সময় অনেক কাজ করেছেন। ২০০৬ সালের দিকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটভুক্ত হয়েছেন। তখন থেকেই নিয়মিত ভাতা পাচ্ছেন। যাচাই-বাছাইকালে মহানগরীর যে আটজনের ব্যাপারে দ্বিধাবিভক্ত সিদ্ধান্ত পাওয়া গেছে তারা হলেন- মৃত নজিবর রহমান, মৃত হিসাব উদ্দীন আহমেদ, রুহুল আমিন প্রামাণিক, বদরুল আলম, আবদুল আজীজ, মজিবুর রহমান, মৃত মোয়াজ্জেম হোসেন এবং সারওয়ার ই-কামাল স্বপন।

যাচাই-বাছাই কমিটির সদস্য সচিব ও রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মুহাম্মদ শরিফুল হক বুধবার রাতে বলেন, মূলত তিনি এখানে সচিবের দায়িত্ব পালন করেছেন। নির্বাচিত মুক্তিযোদ্ধারাই এই বিষয়টি যাচাই-বাছাই করেছেন। আপনারা সবাই তাদেরকে চেনেন এবং জানেন।

যাচাই-বাছাই শেষে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি প্রতিবেদন জামুকায় পাঠানো হয়েছে। তাদের দায়িত্ব ছিল যাচাই-বাছাই করে এই তালিকা পাঠানো। এখন তাদের ভাতা পাওয়া বা না পাওয়া অথবা অন্য যে কোনো সিদ্ধান্ত জামুকা এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় গ্রহণ করবে। তাদের কাছে যেরকম নির্দেশনা আসবে তারা সেই রকমই পদক্ষেপ নেবেন।

আরবিসি/১৭ ফেব্রুয়ারি/ রোজি

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category