আরবিসি ডেস্ক : বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেসরকারি উদ্যোগে চাল আমদানি শুরু হয়েছিল; তবে তাতে কমেনি চালের দাম।
এর কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, দাম কিছুটা কমার জন্য চালের যে সরবরাহ দরকার ছিল তা হয়নি। দেশি চালের ওপর চাপ থাকায় দাম বাড়তিই রয়ে গেছে।
শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, আগের সপ্তাহের মতোই মিনিকেটের ৫০ কেজির বস্তা ৩০৫০ টাকা থেকে ৩১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একইভাবে বিআরআটাশ প্রতি বস্তা ২৪০০ টাকা থেকে ২৫০০ টাকায়, পাইজাম প্রতি বস্তা ২২৫০, ২৩০০ এমনকি ২৪০০ টাকায়ও বিক্রি হচ্ছে।
বেশ কয়েক মাস ধরে মিনিকেটের ৫০ কেজির বস্তা ২৭০০-২৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল। ডিসেম্বরের দ্বিতীয়ার্ধে এসে বাড়তে শুরু করে চালের দাম। ধাপে ধাপে বেড়ে তা তিন হাজার টাকা ছাড়িয়ে যায় বিগত সপ্তাহে।
এবার বোরো মওসুমে সরকার যে পরিমাণ ধান ও চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছিল তা পূরণ হয়নি। দুই দফা বন্যায় দেশে ধানের উৎপাদনও কিছুটা কম হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে ডিসেম্বরের শেষ দিকে (২৭ ডিসেম্বর) চালের আমদানি শুল্ক ৬২ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ করা হয়। এর ফলে ১২ জানুয়ারি থেকে স্বল্পমাত্রায় ভারতীয় চাল বাংলাদেশে ঢুকতে শুরু করে।
তবে বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য যে পরিমাণ চাল আসার প্রয়োজন ছিল, ভারত থেকে সেই পরিমাণ চাল আসেনি বলে কারওয়ান বাজারের বিক্রেতাদের ভাষ্য। দুই সপ্তাহ আগেও কারওয়ান বাজারে কিছু সংখ্যক ভারতীয় চালের বস্তা চোখে পড়েছিল। কিন্ত এদিন তাও দেখা যায়নি।
রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এই বাজারের চাটখিল রাইস এজেন্সির পরিচালক বিল্লাহ হোসেন বলেন, “দেশীয় চালের দাম অনেক বাড়তি। পরিস্থিতি সামাল দিতে চাল আমদানির খবর ছড়ালেও আমদানি করা চাল বাজারে দেখা যায়নি। ফলে দেশীয় চালের দামও আর কমেনি।”
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরেকজন বিক্রেতা বলেন, বাজার নিয়ন্ত্রণে চাল যদি আমদানি করতেই হয় তাবে ২৫ শতাংশ শুল্ক কেন?
“চালের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য দ্রব্যের উপর এত বেশি পরিমাণ শুল্ক বসিয়ে দাম কমানোর চিন্তা অবান্তর। শুল্ক কমিয়ে ৫ শতাংশে নামাতে হবে। তাহলেই কেবল ভারতীয় চালের সুফল পাওয়া যাবে।”
৩২০টি প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ১০ লাখ ১৪ হাজার ৫০০ টন চাল আমদানির অনুমোদন দিয়েছিল খাদ্য মন্ত্রণালয়। কিন্তু এদের অধিকাংশই নির্ধারিত সময়ে চাল দেশে আনতে পারেনি। আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে চাল আমদানির এলসি খুলতে না পারলে অনুমোদন বাতিল করা হবে বলে হুঁশিয়ার করেছে মন্ত্রণালয়।
এদিকে বিশ্ববাজারে দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে দেশের বাজারে ভোজ্যতেলের দামও ঊর্ধমুখী বেশ কিছু দিন ধরে। তবে বিগত সপ্তাহে নতুন করে ভোজ্য তেলের দাম বাড়েনি।
কারওয়ান বাজারে তেলের পাইকারি দোকান বেঙ্গল ট্রেডার্সের মঈন উদ্দিন জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে ভোজ্যতেলের দাম স্থিতিশীল। খোলা সরিষার তেল মাঝখানে বেড়ে গিয়েছিল। গত সপ্তাহে তা আবার কেজিতে ৮-৯ টাকা কমে ১৪০ টাকায় এসেছে।
এছাড়া খোলা সয়াবিন তেলের পাইকারি দাম ১২২ টাকা, খুচরায় ১৩০ টাকা। বাজারে সবচেয়ে সুলভ মূল্যে বিক্রি হচ্ছে আলু, প্রতিকেজি ১৪ টাকা। পেঁয়াজের দামও গত সপ্তাহের তুলনায় কমে এসেছে।
এই সপ্তাহে প্রতি কেজি দেশি মুড়িকাটা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২৬ টাকা থেকে ২৮ টাকা, যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ৩৪ টাকা থেকে ৩৬ টাকায়।
আরবিসি/১২ ফেব্রুয়ারি/ রোজি