স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের সার্বিক সহযোগিতায় রাজশাহী ডিভিশনাল ক্রিকেটার্স এ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত রাঙাপরি ‘বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ টি-টুয়েন্টি ক্রিকেট টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে ফাইটার রাজশাহী। রানার আপ হয়েছে কুমারপাড়া রাইডার্স। ফাইনাল খেলা শেষে শুক্রবার বিকেল ৪টায় শহীদ এ.এইচ.এম কামারুজ্জামান বিভাগীয় স্টেডিয়ামে পুরস্কার বিতরণ করা হয়েছে।
টুর্নামেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে চ্যাম্পিয়ন ও রানার আপ ট্রফি, প্রাইজমানি ও অন্যান্য পুরস্কার বিতরণ করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র বলেন, রাজশাহীর ক্রীড়াঙ্গন আবারো খেলাধূলায় মেতে উঠেছে। বড় আয়োজন থেকে শুরু করে পাড়ায়-মহল্লায় বিভিন্ন টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হচ্ছে। চারিদিকে খেলাধূলার আমেজ। অতীতেও রাজশাহীতে এমন খেলাধূলা হতো। মাঝে কিছুটা ভাটা পড়েছিল। সেটি কাটিয়ে উঠে আমরা এগিয়ে যেতে চাই।
মেয়র আরো বলেন, রাজশাহীর ক্রীড়াঙ্গনে রয়েছে অতীত ঐতিহ্য। আগে নিয়মিত খেলাধূলার মাধ্যমে জাতীয় মানের খেলোয়াড় তৈরি হতো। আবারো যাতে সেই ঐতিহ্য ফিরে আসে, নতুন নতুন জাতীয় মানের খেলোয়াড় তৈরি হয়, সেই লক্ষ্যেই টুর্নামেন্টগুলো আয়োজন করা হচ্ছে। আগামীতেও এমন আয়োজনে আমার সার্বিক সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, মুসলিম গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রির চেয়ারম্যান মাসুম সরকার। আরো বক্তব্য দেন রাজশাহী ডিভিশনাল ক্রিকেটার্স এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও রাজশাহী ডিভিশনাল ক্রিকেট দলের অধিনায়ক জহুরুল ইসলাম অমি।
অনুষ্ঠানে রাজশাহী জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ওয়াহেদুন্নবী অনু, ২২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল হামিদ সরকার টেকন, চ্যাম্পিয়ন টিম ফাইটার রাজশাহীর ওনার তৌরিদ আল মাসুদ রনি, রানার আপ দল কুমারপাড়া রাইডার্স এর ওনার জামিনুর রহমান টিংকু, আমন্ত্রণ রেস্টুরেন্টের স্বত্ত্বাধিকারী আরিফুল ইসলাম আরিফ, টুর্নামেন্ট কমিটির আহবায়ক ক্রিকেটার শাহাজাদা হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এরআগে শুক্রবার সকালে শহীদ কামারুজ্জামান বিভাগীয় স্টেডিয়াে প্রতিযোগিতার ফাইনালে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার আমন্ত্রণ জানান কুমারপাড়া রাইডার্স এর অধিনায়ক জহুরুল ইসলাম অমি। ফাইটার রাজশাহী নিদ্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটের বিনিময়ে ১৭৭ রান করেন। দলের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান মিজান ৫৪ বলে ৬১ রান ছাড়াও সুমন ইসলাম ৩৫ ও মাত্র ৭ বলে ২৪ রান করেন ফরহাদ রেজা।কুমারপাড়া রাইডার্স এর মোহর শেখ ১৯ রানে ৩ ও সুজন হালদার ৪৭ রানের বিনিময়ে ২ উইকেট লাভ করেন। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য ১৭৮ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে কুমারপাড়া রাইডার্স এর সাজিদ শুন্য রানে সাজঘরে ফিরলে বাংলাদেশ জাতীয় দলের দুই উদ্বোধনী খেলোয়াড় এনামুল হক বিজয় ও ইমরুল কায়েশ প্রাথমিক ধাক্কা শামলিয়ে ভালো ভাবে খেলায় ফিরিয়ে আনে দলকে। এর পর জাকারিয়া এনামুল হক বিজয়কে ২৮ রানে ও ফরহাদ রেজা ইমরুল কায়েশকে ৪৭ রানে ফিরিয়ে দিলে দলের হাল ধরেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের অপর খেলোয়াড় দলের অধিনায়ক জহুরুল ইসলাম অমি। কুমারপাড়া রাইডার্স চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করে ঠিক সেই সময় আঘাত হানেন ফাইটার রাজশাহী পেস বোলার বাংলাদেশ জাতীয় দলের খেলোয়াড় আরিফুল হক। তিনি ব্যাক্তিগত ৪৭ রানে অধিনায়ক জহুরুল ইসলাম অমির উইকেট তুলে নিলে কুমারপড়া রাইডার্স এর রান ২০ ওভারে ৬ উইকেটের বিনিময়ে ১৫৮ রানেই থেমে যায়। আরিফুল হক ২৩ রানে ৩ উইকেট ও ফরহাদ রেজা, জাকারিয়া ও দেলোয়ার ১টি করে উইকেট লাভ করেন। খেলায় ৬১ রান করায় ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ নির্বাচিত হন ফাইটার রাজশাহীর মিজান। ম্যান অফ দ্যা টুর্ণামেন্ট নির্বাচিত হন ফাইটার রাজশাহীর আরিফুল হক।
উল্লেখ্য, টুর্নামেন্টে ৬টি দল অংশ নিয়েছিল। দলগুলো হলো কুমারপাড়া রাইডার্স, ফাইটার রাজশাহী, শহীদ শামসুল আলম স্মৃতি সংসদ, মা অটো ব্রিকস, বাংলা ট্রাক ক্রিকেট একাডেমী ও এমএস এ্যাভেঞ্জারস। এই ছয়টি টিমের ৮৪ জন ক্রিকেটার অংশগ্রহণ করে। বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ টি-টুয়েন্টি ক্রিকেট টুর্নামেন্টে ২৯টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। টুর্নামেনেন্ট জাতীয় দলের খেলোয়াড় ফরহাদ রেজা, জুনায়েদ সিদ্দিকী, জহুরুল ইসলাম, সাব্বির হোসেন রুম্মান, সাঞ্জামুল ইসলাম, সাকলাইন সজিব প্রমুখ খেলেছেন। গত ২৬ জানুয়ারি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেছিলেন রাসিক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন।
আরবিসি/১২ ফেব্রুয়ারী/ রোজি