• বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২:২২ অপরাহ্ন

৯ বছরেও তদন্ত শেষ না হওয়ায় হতাশ সাগর-রুনির পরিবার

Reporter Name / ১০৬ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

আরবিসি ডস্কে : সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যাকাণ্ডের ৯ বছর হয়েছে। এ হত্যা মামলার তদন্ত সংস্থা র‍্যাব প্রতিবেদন দাখিল করতে না পারায় ৭৮ বার সময় পিছিয়েছেন আদালত। দীর্ঘ সময়েও মামলাটির তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল না হওয়ায় হতাশ নিহতদের পরিবার। এখনও বিচারের আশায় পথ চেয়ে আছে তারা।

মামলার বাদী রুনির ভাই নওশের আলম রোমান জাগো নিউজকে বলেন, দেশে অনেক হত্যা মামলার বিচার হয়। কিন্তু সাগর-রুনি হত্যা মামলার বিচার হয় না। নয় বছরেও মামলার তদন্ত শেষ করতে পারেনি। মামলার তদন্তের কোনো অগ্রগতি আমাদের জানানো হয় না। আমরা বিচারের আশায় পথ চেয়ে আছি।

ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্দুল্লাহ আবু বলেন, তদন্ত সংস্থার উচিত মামলাটি দ্রুত তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন দাখিল করা।

এ বিষয়ে র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক আশিক বিল্লাহ জাগো নিউজকে বলেন, সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যা মামলার র‍্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অবহিত রয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এ বিষয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন।

গত বছরের ৮ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগর হাকিম আদালত সাগর-রুনি হত্যা মামলার অগ্রগতির বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেন তদন্ত সংস্থা র্যাবকে। আদালতের আদেশে ৫ অক্টোবর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা র্যাব ফোর্সেস সদর দফতরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খন্দকার মো. শফিকুল আলম আদালতে একটি অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করেন।

এতে তিনি উল্লেখ করেন, মামলাটি ২০১৯ সালের ৭ জুলাই থেকে আমি তদন্ত করে আসছি। তদন্তকালে পূর্ববর্তী তদন্তকারী অফিসার তদন্তের আনুষঙ্গিক কাজ করাসহ মোট আটজন আসামি গ্রেফতার করেছেন। গ্রেফতারকৃত আসামিদের মধ্যে ছয়জন বর্তমানে জেল-হাজতে আছেন। দুজন জামিনে মুক্ত আছেন।

পুলিশ সুপার আরও উল্লেখ করেন, মামলাটি যথাযথভাবে তদন্তের লক্ষ্যে জব্দকৃত আলামত ডিএনএ পরীক্ষার জন্য আদালতের অনুমতিক্রমে আইএফএস, ইউএসএ বরাবর পাঠানো হয়। ডিএনএ পরীক্ষার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, পূর্বে পাঠানো আলামত এবং গ্রেফতারকৃত আসামিদের ‘বুক্যাল সোয়াব’ পর্যালোচনায় অজ্ঞাতনামা দুই পুরুষের ডিএনএ পাওয়া গেছে। তদন্তকালে তাদেরকে চিহ্নিত করার উদ্দেশ্যে প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে প্যারাবন স্ন্যাপশট নামীয় মার্কিন অপর একটি ডিএনএ ল্যাবের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির ডিএনএ থেকে জড়িত ব্যক্তির ছবি প্রস্তুত করার সক্ষমতা রয়েছে।

অগ্রগতি প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে পূর্বের প্রতিষ্ঠান আইএফএস-এর সমন্বয়পূর্বক ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের ছবি প্রস্তুতের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। আইএফএস কর্তৃক সংরক্ষিত বর্ণিত ডিএনএ প্যারাবন স্ন্যাপশট নামীয় প্রতিষ্ঠানকে সরবরাহের সার্ভিস চার্জ হিসাবে ১২০০ মার্কিন ডলার ফি নির্ধারণ করায় যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণপূর্বক ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে নির্ধারিত অর্থ পরিশোধ করা হয়েছে। সর্বশেষ ২০২০ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর আইএফএস র্যাব কর্তৃপক্ষকে উল্লিখিত পরীক্ষার অগ্রগতির বিষয়ে মতামতের জন্য ই-মেইল পাঠিয়েছি। আইএফএস ল্যাব কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে এখনও কোনো মতামত দেয়নি। ডিএনএ প্রযুক্তির মাধ্যমে সাক্ষ্যপ্রমাণ সংগ্রহের প্রচেষ্টাসহ মামলার তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত আছে।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক গোলাম মোস্তফা সারোয়ার ওরফে সাগর সারোয়ার ও এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন নাহার রুনা ওরফে মেহেরুন রুনি দম্পতি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের বাসায় খুন হন। খুন হওয়ার পর রুনির ভাই নওশের আলম রোমান শেরেবাংলা নগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

প্রথমে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন ওই থানার এক উপ-পরিদর্শক (এসআই)। চারদিন পর চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার তদন্তভার ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়। দুই মাসেরও বেশি সময় তদন্ত করে ডিবি রহস্য উদঘাটনে ব্যর্থ হয়। পরে হাইকোর্টের নির্দেশে ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল হত্যা মামলাটির তদন্তভার র্যাবের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

মামলায় আটজনকে বিভিন্ন সময় গ্রেফতার করা হয়। এর মধ্যে মিন্টু, কামরুল হাসান, বকুল মিয়া, রফিকুল ইসলাম, আবু সাঈদ ও এনাম আহম্মেদ কারাগারে আছেন। পলাশ রুদ্র পাল ও তানভীর রহমান হাইকোর্ট থেকে জামিনে আছেন।

আরবিসি/১১ ফেব্রুয়ারি/ রোজি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category