আরবিসি ডেস্ক : নতুন যেকোনো কিছুতে থাকে ভয়। আর তাকে জয় করতে পারলেই আনন্দ। মহামারি করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের হাতিয়ার হিসেবে হাতে আসা ভ্যাকসিন গ্রহণে ভয় থাকলেও, করোনাকে জয় করার আনন্দে উচ্ছ্বসিত সবাই।
রোববার (০৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় দেশব্যাপী শুরু হয় করোনার টিকাদান কর্মসূচি।
রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে করোনার টিকা নিয়েছেন মন্ত্রীপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। টিকা নেওয়ার পর অনুভূতি প্রকাশ করে তিনি বলেন, আমার তিন বন্ধু দেশের বাইরে থাকেন। তারা সবাই ভ্যাকসিন এক্সপার্ট। তাদের সঙ্গে আলাপ করেছি। তারা অভয় দিয়েছেন। সেজন্য আমি ভয় পাইনি।
সবাইকে টিকা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে জেষ্ঠ্য এ আমলা বলেন, টিকা নেওয়ার পর আমার কোনো সমস্যা হয়নি। আমার মতে, যার যার সম্ভব টিকা নেওয়া উচিত। দেশের ৭০ শতাংশ লোক টিকা নিলে করোনা ভাইরাস ছড়াবে না।
টিকা নিয়ে স্বস্তিবোধ করছেন জানিয়ে সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক বলেন, করোনার ভ্যাকসিনের জন্য অপেক্ষায় ছিলাম। টিকা দিতে পেরে স্বস্তিবোধ করছি। আমি সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছি টিকা নেওয়ার জন্য। টিকা না দিলে নিজের ক্ষতি, দেশের ক্ষতি।
করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। তিনি বলেন, এখনো অনেকে দেশ ভ্যাকসিন পায়নি। সেখানে আমরা অতিদ্রুত সংগ্রহ করেছি। এজন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ। আমি চাই সবাই টিকা নিক এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুক।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের রেডিওলজি বিভাগে কর্মরত রুকনজ্জামান রিপনও টিকা নিয়েছেন। তিনি বলেন, টিকা নেওয়ায় আমার কোনো সমস্যা হয়নি বরং আমি ভালো বোধ করছি। আধাঘণ্টা রেস্ট নিয়ে আবার কাজে ফিরবো।
একই হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. শহীদুল বারী বললেন, ভয় পেলে তো নিবন্ধনই করতাম না। আমার মধ্যে কোনো ভয় নেই বরং সাহস পাচ্ছি করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএসইউ) ভ্যাকসিন সেন্টারে কথা হলো গৃহিনী মাকসুদা জাহিদের সঙ্গে। তিনি বলেন, শনিবার সন্ধ্যায় সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধন করেছি। রাতে মেসেজ পাঠিয়ে সকালে আসতে বলে। টিকা নেওয়ার পর হালকা বমি বমি ভাব হয়েছে। এর বাইরে আর কোনো সমস্যা হয়নি বরং টিকা নেওয়ায় করোনা থেকে বাঁচার উপায় বের হলো।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে প্রদানকারী সিনিয়র নার্স তোরশা নওশিন বাংলানিউজকে বলেন, টিকা নেওয়ার পরে কারো কোনো সমস্যা হয়নি। আশা করছি, সামনের দিনগুলোতেও হবে না।
এদিকে, জাতীয় পর্যায়ে টিকা দেওয়ার প্রথম দিনে রাজধানী ঢাকায় ৫০টি হাসপাতাল ও সারাদেশে ৯৫৫টি হাসপাতালকে প্রস্তুত করা রয়েছে। এসব টিকা কেন্দ্রে বিভিন্ন জেলার সংসদ সদস্য, রাজনীতিবিদসহ জনপ্রতিনিধিরা টিকা নেবেন। তারা এই টিকা কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়ার জন্য এবং অন্যদের উদ্বুদ্ধ করার জন্য টিকা নেবেন।
শনিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত ২ লাখ ৯৬ হাজার জন টিকা গ্রহণের জন্য নিবন্ধন করেছেন।
এর আগে, গত ২৭ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে করোনাভাইরাসের টিকাদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। সে সময় দুই দিনে মোট ৫৬৭ জনকে টিকা দেওয়া হয়।
আরবিসি/০৭ ফেব্রুয়ারি/ রোজি