আরবিসি ডেস্ক : প্রতিবছর বোরো মৌসুমে চাষাবাদ ও পাকা বোরো ধান কেটে ঘরে তুলতে চাষীদের চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয়। শ্রমিকের মজুরি বেশি আবার মৌসুমের শুরুতে ধানের মূল্য কম হওয়ায় চাষীরা উৎপাদন খরচ মিটিয়ে ধান ঘরে তুলতে গিয়ে হিমশিম খায়। বোরো চাষীদের দুর্ভোগের কথা মাথায় রেখে কৃষি বিভাগ খুলনার পক্ষ থেকে জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার আটলিয়া ইউনিয়নে কৃষি বিভাগের প্রণোদনা কর্মসূচীর আওতায় সনাতন পদ্ধতি পরিহার করে যন্ত্রের সাহায্যে ৫০ একর চাষাবাদে নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করে। প্রণোদনার অর্থে জমি চাষ, বীজ বপন, চারা রোপণ, সার, কীটনাশক প্রয়োগসহ সম্পূর্ণ খরচ বহন করে বোরো আবাদ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। এমনকি ধান কাটা, মাড়াই করে বস্তায় ভর্তি করে কৃষকের ঘরে তুলে দেয়া হবে।
এ বিষয়ে প্রণোদনা সুবিধা পাওয়া বোরো চাষী মোঃ আল আমিন ফকির বলেন, বরাতিয়ার এই বিলে প্রতিবছর প্রায় ৪ বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করেন। কিন্তু শ্রমিকের মজুরি, সার, কীটনাশক ব্যবহার, ধান কেটে মাড়াইসহ নানা খাতে প্রচুর টাকা খরচ হয়। তাতে উৎপাদন খরচও তোলা অসম্ভব হয়ে যায়। এবার কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে আমার জমি বিনা খরচে চাষের সুযোগ করে দিয়েছে। নারী চাষী আসমা খাতুন ও কহিনুর বেগম বলেন, সরকারের কৃষি বিভাগ থেকে আমাদের জমিতে বোরো আবাদের জন্য বীজ, চারা রোপণসহ সার্বিক সহায়তা দেয়া হচ্ছে। কৃষি অফিসার জানিয়েছেন ধান কেটে মাড়াই করে বস্তায় ভর্তি করে তুলে দেয়া হবে। আর এসব কাজ হবে সব মেশিনের মাধ্যমে।
আটলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রতাপ কুমার রায় কৃষি বিভাগের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার আটলিয়া ইউনিয়নটিতে কৃষি বিভাগের এমন উদ্যোগ প্রশংসনীয়। তিনি বলেন, এতে কৃষকের খরচ বাঁচবে। দেশে খাদ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। এমন কর্মসূচী সারাদেশে নেয়ার আহ্বান জানান তিনি।
এ বিষয়ে ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ মোছাদ্দেক হোসেন বলেন, দেশের মধ্যে এটাই প্রথম এবং সবচেয়ে বড় প্লট যেখানে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে বোরো আবাদে সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে। আবাদি জমি নষ্ট হওয়ায় কমে যাচ্ছে ফসলের উৎপাদন। তিনি বলেন, বীজতলা তৈরি, চারা রোপণ, পরিচর্যাসহ সার্বিক কার্যক্রম পরিচালিত হয় যন্ত্রের সাহায্যে। মাত্র ৩০০ মিলিলিটার পেট্রোল দিয়ে এই মেশিনের মাধ্যমে ৪৫ মিনিটে এক বিঘা জমিতে ধান রোপণ করা যায়। শ্রমিক দিয়ে রোপণ করতে কমপক্ষে ৬ শ্রমিকের প্রয়োজন পড়ে। যার মজুরি বাবাদ চাষীকে কমপক্ষে সাড়ে তিন হাজার টাকা পরিশোধ করতে হতো।
আরবিসি /০৫ ফেব্রুয়ারি / রোজি