স্টাফ রিপোর্টার: নির্বাচন মানেই উৎসবের আমেজ। ১৪ ফেব্রুয়ারি চতুর্থ দফায় রাজশাহীর পবা উপজেলার প্রথম শ্রেণির নওহাটা পৌর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
এ নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও আওয়ামী লীগ (স্বতন্ত্র) মেয়র পদে তিনজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। ভোটের লড়াই নৌকার প্রার্থী এগিয়ে আছেন। অন্য মেয়র প্রার্থীরাও প্রায় সমান তালে এগিয়ে চলেছে। আওয়ামী লীগের হাফিজুর রহমান হাফিজ (নৌকা), বিএনপির ধানের শীষের প্রার্থী আলহাজ¦ মকবুল হোসেন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল বারী খান (নারিকেল গাছ) প্রতীকের মধ্যে।
পৌর নির্বাচন উপলক্ষে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের পোস্টারে ছেয়ে গেছে পৌর এলাকার গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো। পৌরসভার রাস্তাঘাট, অলিগলি ও পাড়া-মহল্লা এখন মিছিল, স্লোগানমুখর। ব্যানার-ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে পুরো শহর। চায়ের দোকান থেকে শুরু করে বসতবাড়িতেও এখন আলোচনার বিষয় শুধু নির্বাচন। প্রার্থীরা ভোট চেয়ে চষে বেড়াচ্ছেন তাদের নির্বাচনী এলাকা। নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও আওয়ামী লীগ স্বতন্ত্র প্রার্থী অংশ নিয়েছেন।
গণসংযোগের পাশাপাশি চলছে মাইকে প্রচারণা। পাশাপাশি সমানভাবে চালাচ্ছেন উঠান বৈঠক ও মাইকিং। ভোর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত প্রার্থী, সমর্থক ও কর্মীরা যাচ্ছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে এবং মন জয় করতে দিচ্ছেন নানান প্রতিশ্রুতি।
তবে প্রার্থী মাদক, সন্ত্রাসরোধ ও রাস্তাঘাট, ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে এমন প্রার্থীকেই নির্বাচিত করতে চান ভোটাররা।
নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনিত প্রার্থীকে বিজয়ী করতে প্রচারণা চালাচ্ছে সাবেক ও বর্তমান কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
এছাড়া তৃণমুলের স্থানীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছেন স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী নওহাটা পৌর আওয়ামী লীগ সাবেক সভাপতি আব্দুল বারী খান। গোপনে গোপনে জোর প্রচারনায় ব্যস্ত সময় পার করছেন বিএনপির প্রার্থী মকবুল হোসেন। তবে বিদ্রোহী প্রার্থী বিভিন্ন বিষয়ে অভিযোগ দিয়েছেন বিভিন্ন দপ্তরে।
এদিকে দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় আওয়ামী লীগ নওহাটা পৌর শাখার সভাপতির পদ থেকে বহিস্কার করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। পবা উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও নওহাটা পৌর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মাননান বলেন, সকল স্তরের নেতাকর্মীরা নৌকার প্রার্থীকে জয়ী করতে কাজ করছে এবং ভোটারদের মধ্যেও বেশ উৎসাহ বিরাজ করছে। নির্বাচনে পার্টির কোনো নেতা বিদ্রোহী প্রার্থী হতে পারবে না। যে দাঁড়িয়েছে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী বলেন, তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থীও হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নৌকার প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিলের পর তিনি প্রার্থী হয়ে প্রচারণা শুরু করেছেন। তবে তার নেতাকর্মীদের হুমকি দেয়া হচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে পোষ্টার ছিঁড়া ও নির্বাচনী ক্যাম্প পুড়ানোর ঘটনা ঘটছে। তারপরও তিনি আশাবাদী জনগণের ভালবাসায় বিপুল ভোটের জয়ী হবেন। নির্বাচিত হলে পৌরসভার রাস্তাঘাট, ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ আধুনিক ও ডিজিটাল পৌরসভা তৈরির জন্য সকল কিছু করবেন।
আওয়ামী লীগ মনোনীত হাফিজুর রহমান জানান, নৌকা প্রতীক নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে। জনপ্রিয়তা ও যোগ্যতা আছে বলেই আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন এবং তিনিই জয়ী হবেন। প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে স্বতন্ত্র প্রার্থী দাঁড় করানো হয়েছে। তিনি আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি নষ্ট করছেন। যত ষড়যন্ত্রই করুক ১৪ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনে তিনি জয়ী হবেন।
নওহাটা পৌরসভা নির্বাচন রিটানিং অফিসার শিমুল আকতার বলেন, পুরো পবা উপজেলার নির্বাচনের পরিবেশ অনেক ভালো। ছোট খাটো দু’য়েকটি অভিযোগ থাকলেও এখানে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। প্রার্থীরা তাদের প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
আরবিসি/ ০৫ ফেব্রুয়ারি/ রোজি